আলোচিত ই-কমার্স ইস্যুতে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় নিয়ে বিভিন্ন সভা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। একইসঙ্গে মানুষের লোভ সংবরণ করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল কমার্স (ই-কমার্স) ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে এ সভা শেষ হয় ৫টা ৫০ মিনিটে। 

বাণিজ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। 

ইভ্যালিসহ ই-কমার্সের দায়ভার নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দায় এড়াতে পারে না’ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দায় এড়াতে চাচ্ছি না। এজন্যই তো সভাগুলো করছি। দায় নিতে চাচ্ছি না কীভাবে? একটা ঘটে গেছে বলেই যে সব নষ্ট হয়ে যাবে, বন্ধ হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়।' 

তিনি বলেন, ‘আমরা দায় নিচ্ছি, লক্ষাধিক লোক ই-কমার্সের ওপর বেঁচে আছে, তাদের তো আমরা ডুবাতে পারব না। এজন্য দায় নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সমাধান করা যায়।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাজ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। কিন্তু তারা যে মানুষকে লোভ দেখাচ্ছে, সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে না। ১০০ টাকার জিনিস তারা ৫০ টাকায় দিতে চায়, সেটা কীভাবে সম্ভব? মানুষ লোভ সংবরণ করতে পারেনি, লোভ সংবরণ করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘ইভ্যালির সম্পদ কতটুকু আছে, সেটা শুনতে হবে, সেই আলোচনা করতে হবে। তাদের জেলে ভরে রাখলে তো কিছু পাবে না তারা। আবার কিছু না থাকলে বের করলেও লাভ হবে না।’

মন্ত্রী জানান, কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের মালিক জেলে আছে। আরও কিছু কোম্পানির কেউ কেউ পালিয়ে গেছে। আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, যারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত, নারী, তারা অনেকে ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছে। তাই ই-কমার্স বন্ধ করা যাবে না। যারা চিটিং করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি একটি বিষয় এবং সামনে কীভাবে চলা যায় সেটি একটি বিষয়।

করোনাকালে গত ৪ জুনের আগে ই-কমার্স খাতে ৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি। 

মন্ত্রী বলেন, সবশেষ চারমাসে ই-কমার্সের পণ্যের অর্ডারের ৬০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘স্ক্রো ফান্ডে’ জমা হয়েছে। সুতরাং সতর্ক বার্তা দেওয়ার পরও মানুষ কিন্তু শুনছে না। তাই মানুষকে সচেতন করতে হবে। এ ধরনের বড় কোম্পানিকে এখন থেকে সতর্কীকরণ বার্তা দিতে হবে। 

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যারা প্রতারণা করছে তাদের বিচারের জন্য সিকিউরিটি ও মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট সংশোধন করা হবে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আগে ২ হাজার ব্যবসায়ীও (ই-কমার্স) ছিল না, এখন ২ লাখ ব্যবসায়ী হয়েছে। যে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। ১০/১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এছাড়া আলেশা মার্ট চেষ্টা করছে, আমরা নজরদারি করছি।’

এসএইচআর/এসএম/জেএস