কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের বাস্তবায়ন তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করবে কোরিয়ান কোম্পানি উজো এবং সানজিন। এজন্য কোরিয়ান কোম্পানি দুটিকে ৫৯ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ৫৩৯ টাকায় নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট ৭৫১ কোটি ৭৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকার ৭টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন।
তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ হচ্ছে সমুদ্রের জলরাশির ওপর। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দিনরাত সাগরজল ছুঁয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করবে এই রানওয়েতে। ইতোমধেই ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সমুদ্রে সম্প্রসারণ প্রকল্পে’র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রবক্ষের ওপর নির্মিতব্য ১ হাজার ৭০০ ফুটের রানওয়ের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। রানওয়ের অন্তত ৭০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের পানির ওপর। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাশিয়া থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন গম কিনবে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদফতর রাশিয়ান ফেডারেশন হতে জি টু জি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) গম কিনতে। গম ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া থেকে গম কেনা যাবে। তবে নেগোসিয়েশনের পরেই দাম জানা যাবে।

এছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কাতার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩০ হাজার মে.টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে। এ জন্য ১১৫ কোটি ৫৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৩০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বিসিআইসি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ৫ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে। এ জন্য ১১৯ কোটি ১৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৩০ হাজার মে.টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১১৫ কোটি ৫৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৩০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মে.টন বাল্ক প্রিল্ড ইউরিয়া সার ১১৪ কোটি ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৫৩০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪০ হাজার মে.টন ফার্নেস অয়েল আমদানির জন্য ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট হতে বাকলিয়া চর পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণ এবং ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি প্রকল্পের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৫৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে “রাজশাহী ওয়াসা ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার” প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুটি কোম্পানিকে ৬৫ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার ৪৭০ টাকায় নিয়োগের অনুমোদন উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে এটা অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

এসআর/এসএম