পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল ও চিনির শুল্ক কমাতেও অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, জনস্বার্থে পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার এবং অপরিশােধিত সয়াবিন, অপরিশােধিত পাম ও অপরিশােধিত চিনির শুল্ক হ্রাসের জন্য এনবিআরকে অনুরােধ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজের কোয়ারেন্টাইন পরীক্ষা দ্রুত শেষ করে আইপি ইস্যুকরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরােধ করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি পণ্যের (ভােজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ ও মশুর ডাল) আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রভাবে স্থানীয় বাজারে ঊর্ধ্বমূল্য পরিলক্ষিত হওয়ায় নিত্যপ্রয়ােজনীয় এসব পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

সভা শেষে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, পেঁয়াজের শতকরা ৮০ ভাগ দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ২০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। মূলত ভারত থেকে বেশি আমদানি করা হয়। কিছু মিয়ানমার থেকে আসে।

ভারতের বেঙ্গালুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে সেখানকার বাজারে দাম বেড়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটার প্রভাবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিছুটা ভারতের দাম বাড়ার জন্য আর কিছুটা আশঙ্কা থেকে এই দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সচিব বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি। এনবিআরকে শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

পেঁয়াজের মজুদ যথেষ্ট আছে বলেও এসময় দাবি করেন সচিব।

সচিব বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পেঁয়াজ উৎপাদন কম হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। তার আগে এক মাস হয়ত বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যেও আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন যৌক্তিকভাবে মূল্য প্রতিফলিত হয়, অতি মুনাফা যাতে না করা হয়। বাজার পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য বলা হয়েছে।

খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় নেওয়া হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য জেলা প্রশাসনকদেরও চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।

সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, আমরা চারদিক থেকে চেষ্টা করছি, যতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। একমাস বাড়তি দাম থাকার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু আমাদের দেশে ৫ লাখ টন পেঁয়াজ মজুদ আছে, যা দিয়ে আগামী আড়াই থেকে তিন মাস চলতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ভারত ছাড়াও মিয়ানমার থেকে যদি পেঁয়াজ আনা যায় তাহলে কিন্তু এত প্রেসার পড়ার কথা নয়। তবে বৃষ্টির  কারণে কিছুটা দাম বেড়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। একমাসের কথা বলা হয়েছে, সেটাও যেন সহনীয় মাত্রায় রাখা যায়।

এসএইচআর/এসএম/জেএস