সংগৃহীত ছবি

দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে কয়েকদিন আগেও বাজারে গেলেই বেড়ে যেত ক্রেতাদের দীর্ঘশ্বাস। টান পরেছে পকেটেও। পাইকারি দাম বেশি, চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম এসব কথা বলে বিক্রেতারা পণ্যের দাম হাঁকাতেন উচ্চ মূল্যে।

তবে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বাজার ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। অনেকটা সাধ্যের মধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ শাক, সবজি, মাছ এবং মাংস কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

অন্যদিকে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা পেঁয়াজের ঝাঁজও বাজারের এখন আগের মতো নেই। দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম সাধ্যের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে বলছেন ক্রেতারা।

এছাড়া, গত সপ্তাহে খোলা সয়াবিন এবং পাম ওয়েলের দাম কিছুটা বেড়ে গেলেও চলতি সপ্তাহে তা কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

ভোজ্য তেলের বাজার

গত দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে যোগানে ঘাটতি দেখিয়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। বাড়তি দামে ১৩৫-১৪০ টাকা করে খোলা সয়াবিন তেল ও ১২৫ টাকা করে বিক্রি হয়েছিলো পাম ওয়েল। তবে চলতি সপ্তাহে এসে ১০-১৫ টাকা করে দাম কমেছে এগুলোর দাম।

বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী, এক কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১২৫ টাকায় ও পাম ওয়েল ১১০ টাকা। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে বোতলজাত ভোজ্য তেলের দাম।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর কাঁচাবাজারের মুদির দোকানদার নিলয় রায় বলেন, কিছুদিন আগে ভোজ্য তেলের যোগানে ঘটতি পড়েছিল, তাই হঠাৎ করে দাম বেড়ে যায়। পাইকারি বাজারে অস্থিরতা থাকলে, খুচরা বাজারেও এর সরাসরি প্রভাব পড়ে।

সবজির বাজার

স্বস্তির বাতাস বইছে শীতের সবজি বাজারে। গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমায় দাম কমায় খুশি ক্রেতারাও। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত যোগান থাকায় দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে আছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

সবজির বাজারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতিকেজি উস্তে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা, টমেটো ২৫-৩০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, শিম ৩৫-৪০ টাকা, গাজর ৩৫-৫০ টাকা ও মুলা ১০-১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ১৫-২০ টাকা ও প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা করে।

রাজধানীর গুদারাঘাট কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, শীতের শুরু থেকেই বাজারের পর্যাপ্ত সবজি এসেছে। মাঝে কিছুটা দাম বাড়লেও এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। শীত পর্যন্ত দাম স্বাভাবিকই থাকবে। শীতের পরে হয়তো দাম বাড়তে পারে।

উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা মো. জাহিদ আলম বলেন, এ সপ্তাহে সবজির দাম কম আছে। ইচ্ছে মতো যেকোনো সবজি কেনা যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ক্রেতাদের জন্যই মঙ্গল।

অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজারেও নেই আগের মতো ঝাঁজ। দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম রয়েছে ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে খুচরা বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা দরে।

মাছ-মাংসের বাজার

মাছের বাজার ঘুরেও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। বাজারে বেড়েছে দেশি মাছের সরবরাহ। এরই ধারাবাহিকতায় বাজারে সব মাছের দামও কমতির দিকে।

সর্বশেষ বাজারদর অনুযায়ী, আকারভেদে প্রতি কেজি চিংড়ি মাছ ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা, প্রতিকেজি রুই ২৩০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, দেশি শিং ৪৫০- ৬০০ টাকা, মৃগেল মাছ ১৮০-২০০ টাকা, কই ৪০০-৪৫০ টাকা ও বিভিন্ন প্রকার কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা করে।

সবজি ও মাছের বাজার ক্রেতাদের খুশি রাখতে পারলেও, কিছুটা চওড়া মাংসের বাজার। বেড়েছে বয়লার, কক ও দেশি মুরগি ও গরুর মাংসের দাম।

প্রতিকেজি বয়লার মুরগী ১৪০ টাকা, গরুর মাংস ৫৫০-৫৬০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি পিস কক মুরগী আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকা করে।

এমএসি/এমএইচএস