অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য কলকারখানায় নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। তাই অগ্নি ও অন্যান্য-দুর্ঘটনা নিরোধে পোশাক শিল্প ও রফতানিমুখী শিল্প ছাড়াই বিভিন্ন খাতের প্রায় ৪৬ হাজার শিল্প কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার শিল্প কলকারখানা পরিদর্শন করা হবে।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাল্টি পারপাস হলে, কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা রোধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গঠিত সমন্বিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ টিমের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিডা  ও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। 

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব  মো. এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

সালমান এফ রহমান বলেন, গত ১৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে দেশের শিল্প কলকারখানায় বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে শিল্প কলকারখানার অবকাঠামোগত এবং অগ্নি-দুর্ঘটনা ও অন্যান্য-দুর্ঘটনা নিরোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২৪ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। বিডার নেতৃত্বে বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে অতিদ্রুত সময়ের মাধ্যমে তিনটি উপকমিটি তৈরি এবং এর মাধ্যমে চেক লিস্ট তৈরিসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে আমরা কলকারখানা পরিদর্শন করে, আমাদের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে সমাধান বের করতে পারবো।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কলকারখানাগুলোর মান উন্নয়নের জন্য খুবই স্বল্প সময়ে আমরা  বিডার নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন ও অগ্রাধিকার ভিত্তিক কলকারখানার তালিকা তৈরি করেছি। পোশাক শিল্প ও রফতানিমুখী শিল্প ব্যাতীত বিভিন্ন খাতের প্রায় ৪৬ হাজার শিল্প কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে পরিদর্শনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার শিল্প কলকারখানা পরিদর্শনের লক্ষ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার জন্য মোট ২৭টি পরিদর্শন টিম গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন এ পরিদর্শন কার্যক্রম কোনোভাবেই কোনো অভিযান নয় বরং কলকারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বেসরকারি সেক্টরকে উন্নত সেবা প্রদানের একটি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা।

এহছানে এলাহী বলেন, আমরা সবাই কাজ করছি, কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছি না, তাই দেশের স্বার্থে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের কাজের মাধ্যমে কেউ যেন বিরক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, কলকারখানার মালিকদের বোঝাতে হবে আমরা ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে আসিনি, আমরা ফ্যাক্টরগুলোর বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে এসেছি এবং  উন্নয়ন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি ।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কোনো ভবনের নকশা অনুমোদনের সঙ্গে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকে। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু মালিকপক্ষকে দায়ী করা হয়। দুর্ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু আস্তে আস্তে কমিটিগুলোর কার্যক্রম দেখা যায় না। তাই সমস্যারও সমাধান হয় না। তাই পিপিপির মাধ্যমে সুরক্ষা সেল গঠনের তাগিদ দেন তিনি।

এসআই/এনএফ