প্রতি বছর পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো ছয় হাজার কোটি টাকার পলিসি করে। কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক বিবরণীতে পাওয়া যায় ২৮০০ থেকে ৩২০০ কোটি টাকা। পলিসির বাকি ২৮০০ কোটি টাকা গেল কোথায়— এমন প্রশ্ন রাখেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, এ টাকা কেন বীমা কোম্পানিগুলার আর্থিক প্রতিবেদনে পাওয়া যায় না। এখন যাতে এ অর্থগুলো বীমা কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে পাওয়া যায় সেজন্য আমারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছি। বীমা কোম্পানিগুলোকে একটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পলিসির অর্থ সংগ্রহের জন্য বলেছি।

প্রিমিয়ামে যদি তিন হাজার কোটি টাকা না থাকে তবে এনবিআর এ খাত থেকে ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সঙ্গে বসে এ অর্থ যাতে সরকারের রাজস্ব খাতে আসে সেজন্য কাজ করব

আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন

রোববার (২৪ জানুয়ারি) বাণিজ্য প্রতিদিনের আয়োজিত ‘বীমা খাতের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এ পলিসিগুলোর প্রিমিয়ামে যদি তিন হাজার কোটি টাকা না থাকে তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ খাত থেকে ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সঙ্গে বসে এ অর্থ যাতে সরকারের রাজস্ব খাতে আসে সেজন্য কাজ করব।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন | ছবি- ঢাকা পোস্ট

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেন, এখনও বীমা খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা মানুষের আস্থাহীনতা, এটা দূর করেত হবে। এজন্য প্রথমে বীমা কোম্পানিগুলোকে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। 

ছায়েদুর রহমান বলেন, বেশির ভাগ বীমা কোম্পানির মূলধন এখনও ৩০-৪০ কোটি টাকার ঘরে। কোম্পানিগুলোকে মূলধন আরও অনেক বাড়াতে হবে, নিজেদর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যদি নিজেদেরই সক্ষমতা না থাকে, তাহলে অন্যের ঝুঁকি কীভাবে গ্রহণ করবে?

বেশির ভাগ বীমা কোম্পানির মূলধন এখনও ৩০-৪০ কোটি টাকার ঘরে। কোম্পানিগুলোকে মূলধন আরও অনেক বাড়াতে হবে, নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যদি নিজেদেরই সক্ষমতা না থাকে, তাহলে অন্যের ঝুঁকি কীভাবে গ্রহণ করবে

বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান

তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো যদি নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ায়, তাহলে আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। কারণ তাদের বীমার দাবি পূরণের সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে বীমা করার পর যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে বা বীমাদাবি পরিশোধ করতে না হয়, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স একাডেমির প্রধান ইবরাহীম হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এমআই/এমএআর/