সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৫অক্টোবর) দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইতে সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে ৪২৬ পয়েন্ট। যা গত ৬ মাস ২১ দিনের মধ্যে উভয় পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ সূচক পতন।

এদিকে দরপতনের প্রতিবাদে দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে মানববন্ধন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। এ সময় দ্রুত দরপতন থেকে পুঁজিবাজারকে উত্থানে ফেরানোর দাবি জানানো হয়।

একইসঙ্গে গত ১০ অক্টোবর থেকে চলা এ দরপতনের পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করারও দাবি জানান বিনিয়োগকারীরা।

বড় ধরনের দরপতনের এদিন ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব খাতের শেয়ারে দাম কমেছে। দাম আরও কমবে এ আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা গণহারে শেয়ার বিক্রি করেছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তার বলেন, সোমবার দিনের লেনদেনের শুরুতে প্রথমে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছে। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখা-দেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন। এ কারণে দরপতন হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন যারা অধৈয্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি বলেন, শেয়ারের দাম কমার কোনো কারণ দেখছি না। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দেখা-দেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন, ফলে দরপতন হয়েছে।

ডিএসই ও সিএসইর তথ্য মতে, সোমবার দিনভর অস্থিরতার মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়েছে। এদিন সূচক পতনের মধ্যদিয়ে লেনদেনের শুরু হয়। যা অব্যাহত ছিল দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিট পর্যন্ত। এসময়ে আগের দিনের চেয়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। তবে পরের ২ ঘণ্টা লেনদেন হয়েছে সূচক উঠানামার মধ্যদিয়ে। আজ দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট। যা চলতি বছরের ৪ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ সূচক পতন। ওই দিন ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছিল ১৮১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠানের ৩১ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার ৭১২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৭টির শেয়ারের দাম কমেছে, বেড়েছে ৪৭টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ২২টির।

অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

আজ ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৭১ কোটি ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা কমেছে।

ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ডেল্টা লাইফের শেয়ারের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। তৃতীয় স্থানে ছিল ফরচুন সুজ। এরপর যথাক্রমে ছিল ওরিয়ন ফার্মাসিটিউক্যালস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মা, জেনেক্স ইনফোসেস, আইএফআইসি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম এবং এনআরবিবিসি ব্যাংক লিমিটেড।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬ পয়েন্ট কমে ২০ হাজার ১৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ২৪৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৫২৪ টাকার শেয়ার। এর আগের দিন লেনদনে হয়েছিল ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ ৮১ হাজার ৭৭১ টাকার শেয়ার।

এমআই/এসএম