রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত অ্যামেরিকান বার্গার নামের ফাস্ট ফুডের দোকানে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের একটি দল। অভিযানে দীর্ঘদিনের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিচালিত অভিযানে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে ভোক্তাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও তা সরকারের কোষাগারে জমা দেয়নি। তাৎক্ষণিক অভিযানে গত চার মাসে প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ টাকা বিক্রয় করলেও এক টাকাও ভ্যাট না দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডে আমেরিকান বার্গারে খাবার খেয়ে বিল দিতে গিয়ে ভ্যাটের চালান চান। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের চালান না দেওয়ায় ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরে আজ অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরপরই অভিযানের নির্দেশনা দেই। অভিযানে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরণী তলব করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটকে দ্রুত এই ফাস্ট ফুডকে নিবন্ধনের আওতায় এনে ভ্যাট আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে গোয়েন্দার দল দেখতে পায়, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করলেও ১৩ ডিজিটের ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করেনি। গোয়েন্দার দল রেস্টেুরেন্টের পস মেশিন থেকে বিক্রয় তথ্য জব্দ করে দেখতে পায় ২৩ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রয় করলেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো ধরনের ভ্যাট দেয়নি।

এ বিষয়ে অ্যামেরিকান বার্গারের ধানমন্ডি শাখার ম্যানেজার ওমর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেলে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল আমার শাখায় এসেছিলেন। তারা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংশ্লিষ্ট বেশকিছু কাগজপত্র নিয়ে গেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি।

ভ্যাট আইন অনুসারে, যেকোনো ভ্যাটযোগ্য ব্যবসা শুরুর আগেই যথাযথভাবে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ এবং নির্ধারিত ৬.৩ ফরমে ক্রেতাদের ভ্যাট চালান ইস্যুর বিধান রয়েছে।

একইসাথে মাস শেষে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে স্থানীয় ভ্যাট অফিসে রিটার্নের মাধ্যমে তাদের নিকট থেকে সংগৃহীত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমেরিকান বার্গার আইনের এই বিধান ভঙ্গ করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল।

আরএম/ওএফ