শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাসমূহ ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পে চল‌তি বছ‌রের নভেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রায় ৪৬ শতাংশ; যেখানে জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রায় ১৯ শতাংশ।

বৃহস্প‌তিবার (৩০ ডিসেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি প্রধান অতিথি ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনের প্রধানগণ এবং বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোট ৩৩টি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি বিনিয়োগ প্রকল্প, দুটি কারিগরি সহায়তা ও একটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন। সবমিলিয়ে এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ চার হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি খাতে এক হাজার ২০৩ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য খাতে দুই হাজার ৮১৭ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন খাতে ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর বিপরীতে এক হাজার ৮৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত শিল্প মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি সন্তোষজনক। তবে আরও ভালো করতে হবে। 

শিল্পমন্ত্রী সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড পরিদর্শন এবং ২০২১-২২ মৌসুমের আখ মাড়াই উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ আখচাষী ও চিনিকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেখানে বৈঠক করেছি। চিনি শিল্পের অব্যাহত লোকসান কাটিয়ে উঠতে উচ্চ ফলনশীল আখের জাত উদ্ভাবনের জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি কল-কারখানাগুলোর আধুনিকায়নের কাজ চলবে। একইভাবে অন্যান্য খাতে লোকসান কমিয়ে আনতে আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সংস্থা/দফতরপ্রধানদের নির্দেশনা প্রদান করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে দ্বিতীয় একটি ইউনিট খোলা এবং টঙ্গীতে করপোরেশনসমূহের মালিকানায় থাকা অব্যবহৃত জায়গাসমূহ কাজে লাগানোর জন্য নতুন প্রকল্প প্রণয়নের নির্দেশ দেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মন্থর। কৃষকের দোরগোড়ায় সার সরবরাহ পৌঁছে দিতে দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। দেশের বিভিন্ন জেলায় সারের মূল্য বৃদ্ধি, ওজনে কম, সারের বস্তায় ওজনে কম দেওয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। 

তিনি বলেন, বিসিকের জায়গা যাতে বেহাত না হয় এবং এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সবার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে প্রতিপালনের আহ্বান জানান।

শিল্প সচিব বলেন, প্রতিষ্ঠানসমূহের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে এবং জনবল যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে।

এসআই/এমএআর/