এখনো জমে ওঠেনি রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। দর্শনার্থী কম, তাই কুড়িল থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশে বাসও ছাড়ছে কম। একটি বাস ছেড়ে যাওয়ার পর আরেকটি বাস ছাড়ছে আধা ঘণ্টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা পরে।

নানা চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার হাতছানি নিয়ে গতকাল (১ জানুয়ারি) পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাসব্যাপী চলবে এই মেলা। মেলার স্থান এবার একটু দূরে হওয়ায় দর্শনার্থীদের আনা-নেওয়ার জন্য কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে সরকার। 

মেলার দ্বিতীয় দিন (রোববার) দুপুর একটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত কুড়িল থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশে চারটি বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিটের দাম নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। নির্ধারিত সময়ে বাস না ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক দর্শনার্থী। তারা সময়মতো মেলায় যেতে পারছেন না। 

তবে কুড়িল থেকে বাস ছাড়ার পর মাত্র ৩৫-৪০ মিনিটে বাণিজ্য মেলার গেটে পৌঁছানো যাচ্ছে। এটা যাত্রীদের জন্য স্বস্তির খবর। বাসের যাত্রীদের মধ্যে বিভিন্ন প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা বেশি দেখা গেছে।

মেলায় ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা নাসিমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাসা আশকোনা। সকালে বাণিজ্য মেলায় গিয়েছিলাম। গোসল করে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় আসি। পরে মেলায় ফিরতে দুপুর দুইটা থেকে দুইটা ৩৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। দুইটা ৩৪ মিনিটে কুড়িল থেকে বাস ছাড়ে, এটি বিকেল তিনটায় বাণিজ্য মেলার গেটে পৌঁছে যায়। 

বিআরটিসি বাসের ড্রাইভার আনোয়ার বলেন, লাইনম্যান অনুমতি দিলেই গাড়ি চালাচ্ছি।

বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করেছেন লাইনম্যান আতিক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলনে, সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাস চলাচল করছে। গতকাল থেকে চালু হয়েছে। মেলা এখনো জমে ওঠেনি। তাই বাস যাত্রীতে পূর্ণ হতে সময় লাগছে।

তিনি বলেন, যানজট না থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকে ১০ মিনিট পরপর বাস ছাড়বে।

এদিকে মেলার দ্বিতীয় দিনেও প্রস্তুত হয়‌নি বে‌শির ভাগ স্টল ও প্যাভিলিয়ন। চল‌ছে নির্মাণ আর গোছা‌নোর কাজ। 

সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বাণিজ্য মেলা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা। 

উল্লেখ্য, শনিবার (১ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারই প্রথম স্থায়ী ভেন্যুতে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগে এই মেলা হতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে।

মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল ও ১৫টি ফুড স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এবারের মেলায় প্রদর্শিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া, জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, ক্রীড়া সামগ্রী, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি।

এমআই/এইচকে/জেএস