পণ্য ক্রয় করে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট প্রদানকারীদের পুরস্কৃত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে ১০১ জন ভ্যাটদাতাকে পুরস্কৃত করা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এবার লটারির মাধ্যমে প্রাপ্ত পুরস্কারে টাকাকে আয়কর মুক্ত রাখার আদেশ জারি করলো সংস্থাটি। 

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) লটারির মাধ্যমে ইএফডির মাধ্যমে ভ্যাট প্রদানকারীদের পুরস্কৃত করা হবে। যেখানে একজন ভ্যাটদাতা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার পাচ্ছেন। দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা। ৯৪ জন পাবেন ১০ হাজার টাকা করে। ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্যুকৃত ইএফডি চালানের ওপর ওই লটারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এক হাজার ৫১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছে। ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ডিজিটাল পদ্ধতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ইএফডির উদ্বোধন করেন। প্রাথমিকভাবে ১০০ মেশিন বসানো হয়।

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যাটের অনিয়ম বন্ধ করতেই ইএফডি চালু করা হচ্ছে। ইএফডি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। এর ফলে কথিত হয়রানি দূর হবে। রাজস্ব আদায়ের ব্যয় ও ব্যবসায়িক খরচ কমবে। কর পরিহারের সুযোগ থাকবেন না। রাজস্ব আদায়ে গতি আনার পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অটোমেশনের আওতায় আসবে। লক্ষ্যমাত্রা আগামী জুনের মধ্যে এক লাখ ইএফডি মেশিন বসানো হবে।

মূলত হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ সেবা খাতের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ্যাটের হালনাগাদ তথ্য পেতে ইএফডি মেশিন বসানো হচ্ছে। ২৫ সেবা খাতে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের এ মেশিন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রথম পর্যায়ে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে চালু করা হবে।

ইএফডি থেকে ইস্যুকৃত চালানকে লটারির কুপন হিসাবে বিবেচনা করা হবে। যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে তার পূর্ববর্তী মাসের প্রথম দিবস হতে শেষদিবস পর্যন্ত ইস্যুকৃত ভ্যাট চালানসমূহ লটারির নির্বাচিত করা হবে। এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ প্রতি মাসে এই লটারির আয়োজন করবে। 

লটারির ড্র অনুষ্ঠানের তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিজয়ীদের কুপন নম্বর প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। তারপর বিজয়ীদের ওই মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর কুপন নম্বর মিলিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই–বাছাই করা হবে। 

আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, সই, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ থাকতে হবে। প্রতি মাসে লটারি বিজয়ীদের জন্য মোট ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এনবিআরের কেন্দ্রীয় অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারির আয়োজন করবে।

আরএম/ওএফ