মিলেমিশে ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন কৃষি ব্যাংকের সাবেক এমডি ও এসএ গ্রুপের মালিকরা / প্রতীকী ছবি

লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) বিপরীতে ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএ গ্রুপের বিরুদ্ধে। এসএ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ৭৭ কোটি টাকা ঋণের নামে লুট করেছে। সুদ-আসলে যার পরিমাণ ১৯৯ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

বড় অঙ্কের এ অর্থ লুটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এসএ গ্রুপের মালিক শাহাবুদ্দিন আলমসহ গ্রুপের অংশীদাররা। এ কাজে সরাসরি সহায়তা দিয়েছে কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুস সালামসহ ঊর্ধ্বতনরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে দুদকের মামলার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন এসএ গ্রুপ ও কৃষি ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্তাব্যক্তিরা।

বড় অঙ্কের এ অর্থ লুটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এসএ গ্রুপের মালিক শাহাবুদ্দিন আলমসহ গ্রুপের অংশীদাররা। এ কাজে সরাসরি সহায়তা দিয়েছে কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুস সালামসহ ঊর্ধ্বতনরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে দুদকের মামলার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন এসএ গ্রুপ ও কৃষি ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্তাব্যক্তিরা

ইতোমধ্যে দুদক কমিশন থেকে অনুসন্ধান টিমের সুপারিশে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।  দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। যদিও এসএ গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান টিমের তদারকি কর্মকর্তা ও দুদক পরিচালক আকতার হোসেন আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এসএ গ্রুপের দুর্নীতি-সংশ্লিষ্ট একটি মামলা কমিশন থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মামলাটি দায়ের করা হবে।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে যাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে তারা হলেন- এসএ গ্রুপের মালিক শাহাবুদ্দিন আলম, তার স্ত্রী ইয়াসমিন আলম, তাদের ছেলে সাজ্জাদ আরেফিন আলম, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন মুখ্য কর্মকর্তা মো. তসলিম হোসেন ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মোতাহার হোসেন।

এসএ গ্রুপের মালিক শাহাবুদ্দিন আলম / ছবি- সংগৃহীত

অনুসন্ধান প্রতিবেদনের যা আছে

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসএ গ্রুপের মালিক শাহাবুদ্দিন আলমের নামে আটটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ও সাউথ ইস্টার্ন ট্যাংক টার্মিনাল লিমিটেড অন্যতম। এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হলেন শাহাবুদ্দিন আলমের স্ত্রী ইয়াসমিন আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাবুদ্দিন আলম। অন্যদিকে, সাউথ ইস্টার্ন ট্যাংক টার্মিনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলমের ছেলে শাহরিয়ার আরেফিন আলম।

এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে শাহাবুদ্দিন আলম বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ষোলশহর শাখায় ২০০৪ সালের ২৪ জুলাই চলতি হিসাব খোলেন। এরপর মেসার্স এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ও মেসার্স সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ ও ২০১৩ সালে কৃষি ব্যাংকের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগ থেকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) লিমিট ৮০ কোটি টাকা এবং এলটিআর (লোনের বিপরীতে ট্রাস্ট রিসিপট) লিমিট ৬৫ কোটি টাকা মঞ্জুরির অনুমোদন দেওয়া হয়।

অনুমোদনপত্রে পারি-পাসু সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট (দুই বন্ধকগ্রহীতা ব্যাংক তাদের সিকিউরিটি সমানভাবে শেয়ারিংয়ের জন্য পারি-পাসু এগ্রিমেন্ট সম্পাদন করে) মঞ্জুরি করা লিমিট আবৃতকরণ ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে চার্জ ক্রিয়েশন, কোনো শ্রেণিকৃত লোন নেই মর্মে নিশ্চিত হওয়াসহ কতিপয় শর্তাবলিতে মঞ্জুরি দেওয়া হয়। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে পারি-পাসু সিকিউরিটি শেয়ারিং ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান পূবালী ব্যাংক লিমিটেড থেকে প্রত্যায়ন পাওয়া যায়নি অর্থাৎ পূবালী ব্যাংকের সঙ্গে অদ্যাবধি কৃষি ব্যাংক ষোলশহর শাখার সঙ্গে পারি-পাসু এগ্রিমেন্ট পরিপূর্ণভাবে সম্পাদিত হয়নি।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক শাহাবুদ্দিন আলম / ছবি- সংগৃহীত

২০১৩ সালের ২৪ মে সম্পাদিত করপোরেট গ্যারান্টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নেওয়া হয়। কিন্তু এতে ফ্লুইড ব্যবহার করে ঘষামাজা করে তারিখ পরিবর্তন করা হয়। অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, শাহাবুদ্দিন আলম ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষি ব্যাংকের চট্টগ্রামের ষোলশহর শাখায় তেল উৎপাদনের পালমসহ বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানির জন্য এক কোটি ১২ লাখ দুই হাজার ৫৩৫ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৮৭ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার ৪৫৮ টাকার ১৩টি এলসি খোলেন। সেখানে দেখা যায়, শাহাবুদ্দিন আলম তার আবেদনে অনেক তথ্য দেননি। তারপরও ব্যবস্থাপক রঞ্জন কুমার সাহা, উদয় ভানু দত্ত ও তসনীম হোসেন বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে এলসি খোলার বিষয়ে ঋণ প্রস্তাব শাখা হতে কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠান।

এসএ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ৭৭ কোটি টাকা ঋণের নামে লুট করেছে। সুদ-আসলে যার পরিমাণ ১৯৯ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা

স্বাভাবিকভাবে ঋণ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে গ্রাহকের পূর্ব অভিজ্ঞতা, ঋণ পরিশোধে স্বচ্ছতা, নিষ্কণ্টক জামানত, সিআইবি রিপোর্ট এবং অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা তথ্য সংগ্রহ করে গ্রাহকের ঋণঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইন অনুযায়ী ঋণ প্রস্তাব উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়। কিন্তু এসব বিষয় বিবেচনা না করে অসৎ উদ্দেশ্যে শাখা হতে এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের বিপরীতে এলসি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগে পাঠানো হয়। প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক মোতাহার হোসেন ও মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) আনোয়ার আলী খানের অনুমোদনক্রমে তা চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য এমডি আব্দুস সালামের কাছে উপস্থাপন করা হয়। এরপর তিনি অনুমোদন করায় এলসি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২০২১ সালের ৩০ জুনের হিসাব অনুযায়ী, অপরিশোধিত অর্থের পরিমাণ নিট ৭৭ কোটি সাত হাজার ৫২৭ টাকা এবং সুদ ১২২ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ৪২৬ টাকা। সুদ-আসলসহ মোট ১৯৯ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার ৬৯৬ টাকা। দুদকের অনুসন্ধানকালে আমদানিকারক কর্তৃক আমদানি করা পণ্য খালাস বা তেল উৎপাদন এবং বাজারজাত সংক্রান্ত কোনো তথ্য-প্রমাণ, এমনকি বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় / ফাইল ছবি 

প্রকৃতপক্ষে অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে জালজালিয়াতির আশ্রয়ে প্রতারণার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের অনুকূলে এলসি প্রদান করে আমদানি করা কাঁচামাল উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিজিএম মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। একইভাবে এসএ গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদেরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিজিএম মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। একইভাবে এসএ গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদেরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম ভিত্তিক মেসার্স এসএ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী শাহাবুদ্দীন আলমের বিরুদ্ধে ওঠা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। অনুসন্ধান পর্যায়ে ১৬টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর ঋণের নামে ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শাহাবুদ্দীন আলম এবং তার স্ত্রী ও এসএ গ্রুপের মেসার্স লায়লা বনস্পতি প্রোডাক্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আলমসহ সাতজনকে আসামি করে প্রথম মামলা করে দুদক। যার চার্জশিট ইতোমধ্যে দাখিল হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ব্যাংক এশিয়ার করা এক মামলায় ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেফতার হন এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলম। চট্টগ্রামের ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের সিডিএ অ্যাভিনিউ শাখা থেকে তার নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৭০৯ কোটি ২৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। যে অভিযোগে মামলা দায়ের করে ব্যাংক এশিয়া। যদিও ওই মামলায় বর্তমানে জামিনে রয়েছেন শাহাবুদ্দীন।

এলসির বিপরীতে কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এসএ গ্রুপের বিরুদ্ধে / ফাইল ছবি

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলমের মোট ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ৬২২ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯ টাকা। যদিও দুদক জালজালিয়াতি ও ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অপর্যাপ্ত জামানতের বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।

দুদকের উপপরিচালক ঋত্বিক সাহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধান দলের অন্য দুই সদস্য হলেন- দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক ও ফেরদৌস রহমান। বর্তমানে দুদক উপপরিচালক মো. লুৎফর রহমান অনুসন্ধান টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এসএ গ্রুপের ঋণ রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবিএল) আগ্রাবাদ শাখায় প্রতিষ্ঠানটির ঋণ রয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার পাওনা ৪২৩ কোটি টাকা। ৩৩৮ কোটি টাকা পাবে ব্যাংক এশিয়ার সিডিএ শাখা

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এসএ গ্রুপের ঋণ রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবিএল) আগ্রাবাদ শাখায় প্রতিষ্ঠানটির ঋণ রয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার পাওনা ৪২৩ কোটি টাকা। ৩৩৮ কোটি টাকা পাবে ব্যাংক এশিয়ার সিডিএ শাখা।

এছাড়া ঢাকা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় প্রায় ২৪৭ কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় প্রায় ২২১ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় প্রায় ১৫১ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের লালদীঘি শাখায় প্রায় ১১৮ কোটি টাকা, কৃষি ব্যাংকের ষোলশহর শাখায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় সাড়ে ৫৩ কোটি টাকা, উত্তরা ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় ৫২ কোটি টাকা, প্রাইম লিজিংয়ে ৩৬ কোটি টাকা এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় ১৪ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এর বাইরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির কাছেও বড় অঙ্কের ঋণ রয়েছে এসএ গ্রুপের।

এসএ গ্রুপের অধীন তেল পরিশোধন, খাদ্যপণ্য, দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য, পানীয়, সিমেন্ট, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজারে এ গ্রুপের পরিচিত পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- গোয়ালিনি কনডেন্সড মিল্ক, গুঁড়ো দুধ, মুসকান ড্রিংকিং ওয়াটার, সয়াবিন তেল, ঘি, আটা, ময়দা ইত্যাদি। গত কয়েক বছরে এসএ গ্রুপের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে শতাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরএম/এমএআর/