মুদ্রানীতি সুষ্ঠুভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে রেপো বা নীতি সুদহার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে হলে আগের চেয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি সুদ গুণতে হবে।

রোববার (২৯ মে) মনিটারি পলিসি কমিটির (এমপিসি) ৫৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, চলমান করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা কার্যকর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে করোনার সংক্রমণের তীব্রতা হ্রাস এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্নতা, চলমান রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্য (খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত) মূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ও বৈশ্বিক অর্থনীতির মুখ্য সূচকগুলোর পর্যালোচনার জন্য দেশের মুদ্রানীতি সুষ্ঠুভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত মনিটারি পলিসি কমিটি রেপো সুদহার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।  

সার্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, দেশের মূল্যস্ফীতি সীমিত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার বিদ্যমান ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০-২১ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে রেপোর হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছিল। ব্যাংকে অর্থের যোগান বাড়াতে ওই সময় রেপো এবং রিভার্স রেপোর সুদ কমায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য বলছে, খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্য বহির্ভূত জিনিসপত্রের ক্রমাগত মূল্য বাড়ায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে। যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
 
মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশের রেকর্ড হয়।

চলতি অর্থবছরে সংশোধিত মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৭ শতাংশ যা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। 

এসআই/জেডএস