মহামারি করোনা সংক্রমণের ভীতি কাটলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি ব্যবসা-বাণিজ্য। ফলে বিভিন্ন অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না উদ্যোক্তারা। এতে করে কমেছে ঋণের চাহিদা। ব্যাংকগুলোতে পড়ে আছে অলস টাকা। 

এমন পরিস্থিতিতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে ভালো গ্রাহক খুঁজছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। মাত্র ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে ব্যাংকটি। ব্যাংকের গ্রাহক নয়, কিন্তু ভালো উদ্যোক্তা-তারাও পাবেন এ ঋণ।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ভালো গ্রাহক খুঁজছি। ব্যতিক্রম, যারা এখনো আমাদের গ্রাহক হয়নি। যাদের সুনাম আছে। আমরা মাত্র ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দেব।

অগ্রণী ব্যাংকে বর্তমানে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো তারল্য আছে জানিয়ে শামস উল ইসলাম বলেন, আমাদের ঋণ দিতে সমস্যা হবে না। ভালো গ্রাহক যারা আসবে তারাই ঋণ পাবেন। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের সরকারের ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনার ঋণ ও চলতি মূলধনের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এলসিসহ গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ দেওয়া হবে।

সরকারি এ ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ কমাতেও কাজ করছে উল্লেখ করে এমডি বলেন, আমরা ঋণ আদায় করছি। আমাদের এক সময় মোট ঋণের ৩৯ শতাংশ খেলাপি ছিল। এটি এখন ১১ শতাংশে নেমে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘অগ্রণী রিবেট লোন স্কিম’ নামের ৭ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। এই ঋণের উদ্দেশ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাময়িক আর্থিক সমস্যা নিরসনে চলতি মূলধন জোগান। উৎপাদনমুখী সরকারি অগ্রাধিকার ও রপ্তানিমুখী শিল্প এই ঋণ বাড়তি সুবিধা পাবে। ব্যবসায় অভিজ্ঞতা হতে হবে পাঁচ বছর। ঋণ শোধ করতে হবে ছয় মাসের মধ্যে। চলতি মূলধনের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন ঋণ দেবে অগ্রণী ব্যাংক। নতুন এই ঋণ স্কিমের আওতায় চলতি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ব্যাংকের সব শাখায় এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

ঋণ পেতে গ্রাহকের যোগ্যতা

যেসব গ্রাহকের ঋণ পাঁচ বছরের মধ্যে খেলাপি হয়নি। কোনো ঋণ পুনঃতফসিল হয়নি ও সুদ মওকুফ সুবিধা নেয়নি। আবার কোনো ডিমান্ড ঋণ তৈরি হয়নি, এমন গ্রাহকেরা এই ঋণ পাবেন। গ্রাহককে ঋণ ব্যবহারের ও ঋণ কীভাবে পরিশোধ করা হবে, তা ব্যাংককে জানাতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য দুই লাখ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আলোচিত সময়ে ব্যাংক খাতে অলস টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এই অঙ্ক অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি।

এসআই/জেডএস