ব্যাংকগুলোকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণ রপ্তানি আয়ের ১৮০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। এই সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে জরিমানা হিসেবে ৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।

রোববার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের শর্ত অনুসারে, ব্যাংকগুলো রপ্তানিকারকদের ইডিএফ থেকে ঋণ দেয়। ঋণগ্রহীতা তাদের রপ্তানি থেকে উপার্জনের ১৮০ দিনের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে এই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২৭০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। রফতানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশ। এই ফান্ড থেকে ঋণ নিতে হলে রফতানিকারকদের গুনতে হ‌য় সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ। অর্থাৎ রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ৩ শতাংশ সুদে অর্থ দেবে। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে হবে রপ্তানিকারকদের। এতদিন ইডিএফ থেকে ব্যাংকগুলো ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে রপ্তানিকারকদের কাছে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করত।

২০২০ সালের ৭ এপ্রিল করোনা মহামারিতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রথমবারের মতো ইডিএফ ঋণের সুদের হার ২ শতাংশে নামিয়ে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগে সুদের হার ছয় মাসের লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফারড রেটের (লাইবর) সঙ্গে দেড় শতাংশ যুক্ত করে নির্ধারণ করা হতো।

সেক্ষেত্রে লাইবর রেট প্রতিদিনই ওঠানামা করায় সুদের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশের মতো পড়ে যেত। করোনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ইডিএফ থেকে ঋণ নিলে লাইবর রেটের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকবে না। সুদের হার হবে সরাসরি ২ শতাংশ। রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে বৈদেশিক মুদ্রায় স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠিত হয় এবং ১৯৮৯ সালে তহবিলটির যাত্রা শুরু হয়। ২০০৫ সালে তহবিলটি ১০ কোটিতে উন্নীত করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আকার বাড়িয়ে এখন ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। এই তহবিল থেকে রপ্তানিকারকরা ঋণ নিয়ে ২৭০ দিনের মধ্যে ফেরত দেন। ইডিএফ তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ সুবিধা নিয়েছেন বিজিএমইএ সদস্যরা।

সম্প্রতি রপ্তানি খাতের উন্নয়নে দেশীয় মুদ্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ঋণ দিয়ে দেশের রপ্তানিকারকদের সহায়তা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ এই তহবিলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত। এই তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে ৪৯ ব্যাংক।

এসআই/ওএফ