করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে এ বিধিনিষেধ মানতে হবে। এই সাতদিন ব্যাংক শাখার পাশাপাশি আর্থিক সেবা দেওয়া ব্যাংকের সব উপ-শাখা, বুথ ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ থাকবে।

তবে বিধিনিষেধের সাত দিন সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এটিএম বুথ। একইসঙ্গে চালু থাকবে ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ অনলাইন সেবা। এছাড়া সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংক শাখা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের জন্য খোলা রাখা যাবে। পাশাপাশি স্ব স্ব ব্যাংকের প্রয়োজনে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন করা শাখা (এডি) সীমিতসংখ্যক জনবল দিয়ে খোলা রাখতে পারবে।

সোমবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রসঙ্গে’ সার্কুলার জারি করেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিধিনিষেধের আওতায় সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বলেছে সরকার। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংকের শাখা ও বুথগুলো খোলা থাকবে। কারণ বন্দর কাস্টমসে পণ্য আমদানি-রফতানিতে প্রয়োজন হতে পারে; তাই সেখানকার সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো খোলা থাকবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও এটিএম বুথ চালু থাকবে।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহায়তায় এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহ করবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা সার্বক্ষণিক চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ নির্দেশনা ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের জারি করা অপর এক নির্দেশনায় বলা হয়, সরকার ঘোষিত বিধি নিষেধ চলাকালে সাধারণ জনগণের চাহিদা মোতাবেক নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের জন্য এটিএম সচল ও তাতে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। 

এটিএম-এ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমার ন্যূনতম পরিমাণ হবে এক লাখ টাকা। এছাড়া, অন-আস ও অফ-আস উভয়ক্ষেত্রে টাকা উত্তোলনের একক লেনদেনের ন্যূনতম পরিমাণ একই হবে।

অনুমোদিত এলাকায় অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় অত্যাবশকীয় পণ্য/সেবার সঙ্গে পরিচালিত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান ও নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করবে। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার দেয়া নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করতে হবে।

এর আগে সোমবার (১২ এপ্রিল) কাজ ও চলাচলের ওপর নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সব কর্মকর্তা–কর্মচারীকে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় অবস্থান করতে হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর ও সংশ্লিষ্ট অফিস এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।

এদিকে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ৫ এপ্রিল থেকে সারা দেশে চলাচলে ও কাজে সরকারি বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। ওই বিধিনিষেধ অনুযায়ী ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত খোলা ছিল। আজ লেনদেন হয় একটা পর্যন্ত। আগামীকাল ১৩ এপ্রিলও লেনদেন হবে একটা পর্যন্ত। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল তিনটা পর্যন্ত।

এসআই/আরএইচ