করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে এবং বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাত দিন সারাদেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার। এ খব‌রে ব্যাংকগু‌লো‌তে ভিড় কর‌ছেন গ্রাহ‌ক। বে‌ড়ে‌ছে লেন‌দেন কার্যক্রম। টাকা জমা দেওয়ার চে‌য়ে তোলার হি‌ড়িক লে‌গে‌ গেছে। আর বাড়‌তি লেন‌দে‌নের চা‌পে গ্রাহ‌কদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাংক কর্মীদের।

রোববার (২৭ জুন) রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিল, দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের ব্যাপক ভিড়। ব্যাংকাররা বলছেন, এম‌নিতেই সপ্তা‌হের প্রথম কার্য‌দিবসে লেন‌দে‌নের চা‌প বে‌শি থা‌কে। এর ম‌ধ্যে লকডাউ‌নের খব‌রে আজ‌কে স্বাভা‌বিক দি‌নের তুলনায় গ্রাহ‌কের অ‌নেক ভিড়। তবে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে উত্তোলন কর‌ছে বেশি। পাশাপা‌শি সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে ভিড় একটু বে‌শি।

বেসরকারি খাতের এনআর‌বি‌সি ব্যাংকের প্রধান কার্যাল‌য়ের ব্যবস্থাপক র‌বিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, সবসময় সপ্তা‌হের প্রথম কার্য‌দিবস একটু ভিড় বে‌শি থা‌কে। কিন্তু আজ‌কে স্বাভা‌বিক দি‌নের চে‌য়েও বে‌শি ভিড়। সকাল থে‌কেই গ্রাহ‌কের দীর্ঘ লাইন। এ‌ত গ্রাহক‌কে একস‌ঙ্গে সেবা দি‌তে আমা‌দের দা‌য়িত্বরত কর্মকর্তাদের হিমশিম খে‌তে হ‌চ্ছে। লকডাউ‌নের খব‌রেই এমনটা হ‌য়ে‌ছে ব‌লে ম‌নে কর‌ছেন এ ব্যাংকার।

বোববার দুপু‌রে ম‌তি‌ঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের গি‌য়ে দেখা যায় গ্রাহ‌কের ব্যাপক ভিড়। দীর্ঘ লাই‌নে টাকা উ‌ত্তোল‌নের জন্য গ্রাহক দাঁড়ি‌য়ে আ‌ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ম‌তি‌ঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের কর্মকর্তা পার‌ভেজ আনোয়ার ঢাকা পোস্টকে জানান, লকডাউ‌নের খব‌রে আজ‌কে অ‌নেক ভিড়। সাধারণ লেন‌দে‌ন বে‌শি হ‌চ্ছে। ত‌বে বে‌শি সঞ্চয়প‌ত্রে। অ‌নে‌কে নতুন ক‌রে সঞ্চয়প‌ত্র কিন‌ছেন। এছাড়া সঞ্চয়প‌ত্রে মেয়াদ পূর্ণ ও মুনাফা উ‌ত্তোল‌নের জন্য অ‌নে‌কে এ‌সে‌ছেন।

‌সোনালী ব্যাং‌কে আ‌মিনুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক জানান, সোমবার থে‌কে লকডাউ‌ন ঘোষণা করেছে সরকার। কী পরিস্থিতি হ‌বে বোঝা যা‌চ্ছে না। জরু‌রি প্র‌য়োজ‌নে নগদ টাকা লাগ‌বে তাই তুলতে এসে‌ছি।

সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত সীমিত পরিসরে লকডাউন কার্যকর করবে সরকার। আর বৃহস্পতিবার থেকে ৭ দিনের জন্য পুরোপুরি লকডাউন থাকবে দেশ।

লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী যান ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম লকডাউনের আওতা বহির্ভূত থাকবে।

এ‌দিকে সরকার ঘোষিত লকডাউন সুন্দরভাবে পালন করতে সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

চলমান বি‌ধি‌নি‌ষে‌ধে সীমিত পরিসরে ব্যাংক চল‌ছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হচ্ছে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

এসআই/জেডএস