করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। এ সময়ে সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে ব্যাংক। সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

এর আগে ৩০ জুন (বুধবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রসঙ্গে’ নতুন এ নির্দেশনা জারি করে।

এদিকে আজকে চারদিন পর ব্যাংক লেনদেন শুরু হচ্ছে। এর আগে ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে এবং ২ ও ৩ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ব্যাংক বন্ধ ছিল। বিধিনিষেধ চলাকালে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিসহ প্রতি রোববারও ব্যাংক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সীমিত পরিসরে ব্যাংক ব্যবস্থা পরিচালনার সময় করণীয়
ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অত্যাবশ্যকীয় বিভাগগুলো যথাসম্ভব সীমিত লােকবলের মাধ্যমে খোলা রাখতে হবে। এছাড়া ব্যাংকের প্রিন্সিপাল বা প্রধান শাখা এবং সব বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা (এডি শাখা) সীমিত সংখ্যক অত্যাবশ্যকীয় লােকবলের মাধ্যমে খোলা রাখতে বলা হয়েছে।

রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ব্যাংক তাদের ব্যাংক ব্যবস্থাপনা বিবেচনায় প্রতিটি জেলা সদরে ও উপজেলায় ১টি করে শাখা খোলা রাখতে হবে। অন্যান্য সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রতিটি জেলা সদরে ১টি শাখা খােলা রাখতে হবে এবং জেলা সদরের বাইরে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার বিবেচনায় অনধিক ২টি শাখা খােলা রাখা যাবে।

কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিক চালু এবং এটিএম বুথগুলােতে পর্যাপ্ত নােট সরবরাহসহ সার্বক্ষণিক চালু রাখতে বলা হয়েছে।

সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকায় (পাের্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা, উপ-শাখা ও বুথ সার্বক্ষণিক খােলা রাখতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলােচনা করে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিধিনিষেধ চলাকালে যেসব শাখা বন্ধ থাকবে সেসব শাখার গ্রাহকসেবা কার্যক্রম খোলা রাখা শাখার মাধ্যমে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বন্ধ শাখার গ্রাহকদের গ্রাহক সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে অবহিত করতে ওই শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে।

সব খােলা রাখা শাখার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক সীমিত সংখ্যক লােকবলের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে হবে। বিধিনিষেধ চলাকালে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ব স্ব অফিসে আনা-নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলাচলের সময় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয়পত্র বহন করতে হবে।

চেক ক্লিয়ারিংয়ের জন্য আজ থেকে নতুন সময় সময়সূচি-
করোনা পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং ও পরিশোধ সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জরুরি আন্তঃব্যাংক লেনদেনের সুবিধার্থে বিধিনিষেধ চলাকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বা আরটিজিএস, স্বয়ংক্রিয় চেক নিকাশ ঘরের ( বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ-বিএসিএইচ বা ব্যাচ) মাধ্যমে হাই ভ্যালু চেক (৫ লাখ টাকার বেশি) এবং রেগুলার ভ্যালু চেকের (৫ লাখ টাকার কম) নিকাশ ব্যবস্থা নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, পাঁচ লাখ টাকার বেশি অংকের চেক ক্লিয়ারিংয়ের জন্য বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে পাঠাতে হবে। এসব চেক দুপুর ১টার মধ্যে নিষ্পত্তি হবে। আর যেকোনো রেগুলার চেক দুপুর ১২টার মধ্যে ক্লিয়ারিং হাউজে পাঠাতে হবে। এসব চেক বেলা ২টার ম‌ধ্যে নিষ্পত্তি হ‌বে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের দিনগুলোতে এই সময়ে চেক ক্লিয়ারিং করবে বিএসিএইচ।

আরটিজিএস-এর লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। তবে, কাস্টমস শুল্ক-করাদি, ফি, চার্জ প্রভৃতি পরিশোধ ও আন্তঃব্যাংক লেনদেন আরটিজিএস-এর মাধ্যমে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত পরিশোধ করা যাবে।

বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) সেবা পূর্বের নিয়মে চলবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

এসআই/এসএম