পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে (ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড- সিএমএসএফ) ব্যাংকগুলো কত টাকা বা অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ দিয়েছে তা জানতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে এ তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠন করেছে। এ তহবিলে ব্যাংকগুলো কত টাকা বা কী পরিমাণ অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ দিয়েছে তা জানানোর জন্য আজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে তাদের এ তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।  

এর আগে গতবছরের ১ জুলাই পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠনের গেজেট হয়। পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ দাবিহীন ও অবণ্টিত অর্থ বিনিয়োগে আনতে এ তহবিল গঠন করা হয় বলে জানায় বিএসইসি। সংস্থাটি এমন ধারণাও দিয়েছিল যে, দাবিহীন ও অবণ্টিত অর্থের পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা। তবে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এ তহবিলে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

তহবিল গঠনের বিধিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে শেয়ারবাজারের কোনো কোম্পানির কাছে বিনিয়োগকারী বা গ্রাহকের অর্থ তিন বছরের বেশি সময় অদাবিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে তা নতুন এ তহবিলে স্থানান্তর করতে হবে।

তহবিলের অর্থ শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। তবে কোনো বিনিয়োগকারী কখনো যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে তার লভ্যাংশ দাবি করেন, তাহলে যাচাই-বাছাই শেষে তা তহবিল থেকে নিষ্পত্তি করা হবে।

অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ কী?  

কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নগদ লভ্যাংশ সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। স্টক লভ্যাংশ জমা হয় তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে।

যাদের নামে শেয়ার তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে, কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এমন ক্ষেত্রে লভ্যাংশের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়।

বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর অনেক সময় তথ্য বা কাগজপত্রের অভাবে তার মনোনীত উত্তরাধিকারও সেই টাকা বা শেয়ার আর দাবি করেন না।

এর বাইরেও আইনি জটিলতা বা অন্য কারণে লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীর হাতে পৌঁছায় না অনেক সময়। তখন কোম্পানি ওইসব লভ্যাংশ ‘সাসপেন্ডেড’ হিসাবে জমা দেখিয়ে চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী তৈরি করে।

সিডিবিএল হিসাবে থাকা ওইরকম ৩ হাজার ৩১৫টি সাসপেন্ডেড হিসাবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ রয়েছে।

এসআই/এইচকে