প্রাক বাজেট সভায় বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন

পুনঃবিমা কমিশনের বিপরীতে পুনরায় মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) আদায় আইনসঙ্গত নয় দাবি করে তা প্রত্যাহার চায় বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে প্রাক বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন ওই প্রস্তাবসহ বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করেন।

কবির হোসেন বলেন, ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূসক আইনসহ প্রচলিত অন্যান্য সব আইনের বিধান অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনযোগ্য সব ধরনের ভ্যাট কেটে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় রি-ইনস্যুরেন্স বা পুনঃবিমার ওপর ভ্যাট অযৌক্তিক। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বিমা শিল্প উন্নত হলেও বাংলাদেশ এখনও তা হতে পারেনি। এ অবস্থায় পুনরায় ভ্যাট আরোপ দ্বিগুণ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম গ্রহণের সময় গ্রাহকের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ মূসক গ্রহণ করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। বিমা কোম্পানি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এ প্রিমিয়ামের একটি অংশ পুনঃবিমাকারীকে প্রদান করে পুনঃবিমা গ্রহণ করে থাকে। যেহেতু প্রিমিয়াম গ্রহণকালে সম্পূর্ণ প্রিমিয়ামের উপর আইন অনুযায়ী মূসক গ্রহণ করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয় এবং এ প্রিমিয়ামেরই একটি অংশ পুনঃবিমাকারীকে প্রদান করা হয়। তাই পুনঃবিমা প্রিমিয়ামের কমিশনের উপর ১৫ ভ্যাট আরোপের সুযোগ নেই।

এ সময় প্রস্তাবনায় মুনাফার ওপর গেইন ট্যাক্সও প্রত্যাহার দাবি করে কবির হোসেন বলেন, ২০১৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী দেশের সব জীবন বিমা কোম্পানির পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার ওপর পাঁচ শতাংশ গেইন ট্যাক্স আরোপ করার ফলে পলিসি হোল্ডারের সংখ্যা কমছে। গ্রাম-গঞ্জের ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডারদের ঝুঁকির বিষয় মুনাফার সুবিধার কথা বুঝিয়ে তারপর পলিসি বিক্রি করা হয়। ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার ওপর পাঁচ শতাংশ গেইন ট্যাক্সেরে যে বিধান চালু করা হয়েছে, তা যদি প্রত্যাহার না হয়, তাহলে দেশে লাইফ ইনস্যুরেন্সের ব্যবসার পরিধি প্রতিনিয়ত কমবে। কোম্পানিগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কষ্ট হবে। তাই পাঁচ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া করপোরেট কর হার কমানো ও বিমা এজেন্টদের প্রযোজ্য অগ্রিম পাঁচ শতাংশ কর পরিশোধের বিধান দুই বছরের জন্য স্থগিত করার দাবি করে করেন সংশ্লিষ্ট খাতের নেতারা।

আলোচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান- ব্যাংক, বিমা ও মার্চেন্ট ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ও সংগঠনের পক্ষে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর সকলের প্রস্তাবনা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। আমরা চাই রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে। এজন্য করদাতাদের পথকে সহজ করতে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়বে।

সভায় এনবিআরের আয়কর নীতি’র সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন বিভাগের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম,ভ্যাট নীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএম/এমএইচএস