বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানিয়েছেন, গ্রাহকদের আমানতের টাকা সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।

বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ এ এসব কথা বলেন তিনি।

সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় সিএমজেএফের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমান।

জয়নুল বারী বলেন, বিমা খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে পাশাপাশি সমস্যাও রয়েছে। এ সমস্যাগুলো রাতারাতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এগুলো নিয়ে কাজ করছি। আস্তে আস্তে সমস্যাগুলোর সমাধান হলে বিমা খাত এগিয়ে যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রাহকের আমানতের টাকা দিয়ে বিমা কোম্পানিগুলো জমি কেনার সময় বেশি দামে কিনে টাকা সরিয়ে নেয়। আবার বিক্রির সময় কম দামে বিক্রি করে। বিমা কোম্পানিগুলোর জমি কেনাবেচার বিষয়ে কঠোর নজর দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এতদিন শুধু অনিয়মের কারণে কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করা হত। এখন কোম্পানির সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, বিমা খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সঠিক সময়ে গ্রাহকদের বিমার দাবি পরিশোধ না করা। কোম্পানিগুলোর আর্থিক সংকটের কারণে এখন বিমার দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। এ আর্থিক সংকট হয়েছে নিয়মের বহির্ভূত ব্যয় ও অর্থ আত্মসাতের কারণে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বিমা কোম্পানিগুলোকে ডেকেছি। তাদের নিয়ে সভা করেছি। দ্রুত বিমার দাবি পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছি। তাদের প্রতিমাসে কী পরিমাণ বিমার দাবি রয়েছে কিংবা পরিশোধ করা হয়েছে তা জানাতে নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা দেখেছি, ৮-১০টি কোম্পানি বিমার দাবি পরিশোধ করছে না। তাদের সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদকে ডেকেছি। তাদের বিমার দাবি পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তারা দাবি পরিশোধের জন্য জমি বিক্রি করতে চেয়েছে। আমরা দেখছি।

তিনি বলেন, দুই-একটা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা অনেক খারাপ। এ কোম্পানিগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু বন্ধ করে দেওয়াই আসল সমাধান নয়। আমরা কোম্পানিগুলোকে ভালো রাখার চেষ্টা করছি। ভালো না হলে প্রয়োজনে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেব।      

জয়নুল বারী বলেন, আমরা বিমা আইনের সময়োপযোগী সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। ১০ বছর ধরে বিমা আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমরা দেখেছি কিছু কিছু জায়গায় সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। এত বেশি ধারায় রেগুলেশন করার কথা বলা আছে যা একেবারেই বাস্তবায়নের অযোগ্য। প্রতিটি ধারায় বলা হয়েছে রেগুলেশন দ্বারা নির্ধারিত করতে হবে। কত রেগুলেশন দ্বারা করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা ২৫টির মতো রেগুলেশন করেছি। আরও ২৫টি পাইপলাইনে রয়েছে। আমরা এটার পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। সব জায়গায় রেগুলেশনের দরকার নেই। অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে অডিট করাতে হলে ফার্ম নির্ধারণ করতে হবে রেগুলেশন দ্বারা। এ রকম করতে থাকলে তো রেগুলেশনের ঘুরপাকে থাকতে হবে সারাদিন।

জয়নুল বারী আরও বলেন, বিমা আইন সংশোধনের জন্য আমরা ইতোমধ্যে একটি মিটিংও করেছি। অফিসারদের দায়িত্ব দিয়েছি। তারা যে যে ধারায় সংশোধনের প্রয়োজন তা নির্ধারণ করছেন। যতদ্রুত সম্ভব আমরা তার একটি খসড়া তৈরি করে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। বিমা আইন যুগোপযোগী করতেই হবে।

এমআই/এফকে