বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মো. খোরশেদ আলম মারা গেছেন (ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিউন)। তিনি ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সালের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বুধবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে এবং টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একজন ভাষা সৈনিক, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন নিউ ইংল্যান্ড প্রতিষ্ঠা এবং সেখান থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।

১৯৫৭ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগদানের মাধ্যমে তিনি পেশাগত জীবন শুরু করেন। খোরশেদ আলম চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও পাবনার জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত জীবনে মরহুম আলম তথ্য, স্থানীয় সরকার, যোগাযোগ, শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থ সচিব এবং তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নর হিসেবে যোগদানের আগে তিনি মূখ্য অর্থ সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।

খোরশেদ আলম ১৯৩৫ সালের ১৫ জানুয়ারি নরসিংদী জেলার রাম নগরে জন্মগ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে মরহুম আলম একজন অতি মেধাবী কর্মকর্তা ছিলেন। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছিল তার পেশাগত জীবনের অনন্য বৈশিষ্ট্য। তিনিই প্রথম বাংলাদেশ ব্যাংকে মুদ্রানীতি কমিটি গঠন ও পরিচালনা করেন। আর্থিক খাত কর্মসূচির আওতায় তিনি আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে সুসমন্বয়পূর্বক কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

খোরশেদ আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, স্বদেশী চেতনায় সমৃদ্ধ, সততা, দক্ষতা ও অনন্য হৃদয়ের অধিকারী মরহুম আলম আর্থিক খাতের কর্ণধার হিসেবে এদেশে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি স্ত্রী, চার পুত্র ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সমগ্র ব্যাংক পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করছে। মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

এসআই/এসএম