বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

বিনিয়োগকারীদের আমানত যারা রক্ষা করতে পারেন না তারা মানুষই না বলে ব্রোকারদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

তিনি বলেন, নিজের সম্পদের চেয়ে বিনিয়োগকারীদের সম্পদকে বেশি ভালোভাবে রক্ষা করতে হবে। তাদের সম্পদ ব্রোকারদের কাছে আমানত। এই আমানত যারা রক্ষা করতে পারে না, তারা মানুষই না। আমানতের সুরক্ষার বিষয়ে প্রতিটি ধর্মে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে আয়োজিত ‘বিনিয়োগকারীদের ফান্ড ও সিকিউরিটিজের সুরক্ষা জোরদারকরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূইয়া, ডিবিএ সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও এবং সিডিবিএলের এমডি শুভ্র কান্তি চৌধুরী।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, গত ২ মাসে ৫০০ ফাইল ক্লিয়ার করা হয়েছে। চাইলে সবাইকেই জরিমানা করা যেত। অর্থ আত্মসাৎকারী ৩ ব্রোকারেজ হাউজের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে ডেকে ৬০-৭০ কোটি টাকা কোথায় রেখেছেন, তা জিজ্ঞেস করেছিলাম। কিন্তু কোনো জবাব দেয়নি, চুপ করে ছিল। এতো টাকা তো বস্তায় ভরে বাসায় নিয়ে রাখাও সম্ভব না। যেহেতু জবাব দেয়নি, নিশ্চয় অনিয়ম করেছে। এ কারণে পাসপোর্ট জব্দ, এয়ারপোর্ট ও বাসা থেকে গ্রেফতার পর্যন্ত করাতে হয়েছে। কিন্তু এসব করতে আমাদের ভালো লাগে না। আমরা চাই সবাই ভালোভাবে ব্যবসা করুক।

ব্রোকার হাউজগুলোকে অবশ্যই আইন পরিপালন করে চলতে হবে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, কোন কাজে আপনাদের সহায়তা লাগবে, সেটা কমিশনকে বলবেন। আমাদের কাজই হলো আপনাদের সহায়তা করা। কোনো কাজে সমস্যা হলে, সিডিবিএল কোনো সমস্যা করলে তা বিএসইসিকে বলবেন। আমরা আপনাদের সহায়তা করতেই আছি। তবে আপনাদেরকে আইনের ভেতরে থেকেই কাজ করতে হবে।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ব্রোকার হাউজের সহায়তা হয় এমন সব কাজই করবে বিএসইসি। তবে ব্রোকার হাউজগুলোকে আইন মেনে চলতে হবে।

কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, অনেক ব্রোকার হাউজের কমপ্লায়েন্ট অফিসারই নিয়মকানুন মানেন না। অথচ তিনি কমপ্লায়েন্ট অফিসার। এছাড়া অ্যাসোসিয়েশনের নেতাসহ ডিএসইর সাবেক কিছু নেতাও আইন অমান্য করেন। তাহলে তারা কিসের নেতা। যারা নিজেরাই আইন মেনে চলেন না। তাই ওই সব সম্মানী ব্যক্তিদের সম্মান রক্ষার জন্য আইন মেনে চলার আহ্বান করেছেন তিনি। অন্যথায় কমিশন যদি ব্যবস্থা নেয়, তখন কোনো সুপারিশে কাজ হবে না। আর সুপারিশে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া কমিশনের কাজ না বলেও জানান তিনি।

আব্দুল হালিম বলেন, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এমন সব অনিয়ম পাওয়া যায়, যা মানার অযোগ্য। এরইমধ্যে ২০-২৫টি ব্রোকার প্রতিষ্ঠানকে রেড জোনে রাখা হয়েছে।

ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের ৬৫ বছরের ইতিহাসে ব্রোকারদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। তবে গত দেড় বছরে ৩টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। যা দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বর্তমান কমিশন অনেক কাজ করলেও তাদের সময়ে ওই ৩টি ঘটনায় বিনিয়োগকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছে না। এর ফলে বাজারে আস্থা কমবে।

এমআই/ওএফ