নতুন অর্থবছরের বাজেট, এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত এক মাস ধরে টালমাটাল দেশের পুঁজিবাজার। এই পড়তি বাজারেও যেন আলাদিনের চেরাগ মিলেছে। আর সেটি হলো মেঘনা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার। এই কোম্পানিটির শেয়ার গত ৮ জুন তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে দাম বেড়েছে প্রায় ৫ গুণ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনোরকম সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই হু হু করে বাড়ছে শেয়ারটি। এটা অস্বাভাবিক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উচিত এই শেয়ারটির দাম বৃদ্ধির পেছনে কে বা কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে গত মাসের ৮ জুন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় মেঘনা ইন্স্যুরেন্স। তালিকাভুক্তির দিন ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের কোম্পানিটির শেয়ার ১ টাকা বেড়ে লেনদেন হয় ১১ টাকায়। এরপর শেয়ারটি বিরতিহীনভাবে বাড়ছে। ফলে ৮ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৫ গুণ দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ৪৭ টাকা ৩০ পয়সা বেড়েছে। 

পক্ষান্তরে তার বিপরীত চিত্র রয়েছে পুঁজিবাজারে। এসময়ে ব্যাংক-বিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

শেয়ারটির দাম এভাবে বাড়ার বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এক দেড় বছর বিমা কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি হয়েছে। এখন মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কারসাজি চক্রকে যথাযথ শাস্তি দিচ্ছে না, ফলে দিনদিন কারসাজি চক্রের হাতে পুঁজিবাজার জিম্মি হয়ে উঠেছে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএসইর তথ্য মতে, আইপিওতে তালিকাভুক্তির সময়ে মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বাজার মূল্য ছিল ৪০ কোটি টাকা। সেই শেয়ারটির দাম ৪৭ টাকা বাড়ায় বাজার মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির চার কোটি শেয়ারের মধ্যে ৩০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকের হাতে। ৪৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। বাকি শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে।

এমআই/জেডএস