বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক বেড়েছে ২৭ পয়েন্ট।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারেরও দাম বেড়েছে। তবে লেনদেন কিছুটা কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজ বিমা খাতের তালিকাভুক্ত ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩০টি, কমেছে ১০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। বিমা খাতের পাশাপাশি আইটি, ওষুধ ও রসায়ন, সিরামিক খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে। এই খাতের শেয়ারগুলো সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছ। এতে বুধবার দরপতনের পর আর আজ বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে উত্থান হলো।

এর আগে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের জন্য আয়কর পরিপত্র প্রকাশ করে। এই আয়কর পরিপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় পুঁজিবাজারে। ফলে সূচক কমে বুধবার বড় দরপতন হয়।

সংশোধনী আয়কর পরিপত্রের বলা হয়, সরকারি সিকিউরিটিজ এবং পাবলিক কোম্পানির স্টকস ও শেয়ার হস্তান্তর হতে অর্জিত মূলধনী আয় করযোগ্য। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছাড়িয়ে পড়ে যে, শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে অর্জিত মূলধনী আয় করমুক্ত ছিল, কিন্তু এখন থেকে করারোপ করা হবে। তারপর শেষ দুই ঘণ্টা লেনদেন হয় শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে।  

এরপর বিষয়টি নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি জানান, বিষয়টি সঠিক নয়। এনবিআর জানিয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ে শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে অর্জিত আয় করমুক্তই থাকছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার শঙ্কা কেটেছে। 

তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ২০ কোটি ৪০ লাখ ৮৮ হাজার ৪৮১টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার মূল্য ১ হাজার ২৪২ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩০৭ কোটি ৭৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭১টি কোম্পানির শেয়ারের। এর মধ্যে ১২৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১০৭টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম।

অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ১২ দশমিক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪২৯ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ১১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

এদিন লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকোর শেয়ার। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। আগের দিনের মতই লেনদেনে তৃতীয় স্থান দখল করেছে জেএমআই হসপিটাল। এরপর যথাক্রমে লেনদেনের শীর্ষে ছিল-বিডিকম, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, ইউনিক হোটেল, শাইনপুকুর সিরামিক, লাফার্জহোলসিম এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন লিমিটেডের শেয়ার।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭২ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ১৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ বাজারে ২৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৯১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ১ হাজার ৯৯৪ টাকার শেয়ার। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২১ কোটি ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭২০ টাকার শেয়ার।

এমআই/এসকেডি