ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বাজারে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও ২০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। এর উল্টো অবস্থা হলে ফ্লোর প্রাইসের প্রয়োজন হতো না।

তিনি বলেন, আমার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছে। এটা পার্মানেন্ট কিছু না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক যে সংকট তৈরি হয়েছে। সেটি কাটিয়ে উঠলেই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হবে।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমরা যখন এসেছি তখন ছিল করোনা, একদম বন্ধ মার্কেট। আমরা এসেই কাজ করেছি কীভাবে পুঁজিবাজারকে চালু করা যায়। বন্ধ মার্কেটকে পুনরায় চালু করতে আমরা ঠিকই প্রতিদিন অফিস করেছি। কিন্তু আমরা ছাড়াও মার্কেটে যারা কাজ করে, যারা মধ্যস্থতাকারী আছেন তারা অফিস করছিলেন না। তারা ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না। তারপরও আমরা মার্কেটকে সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টে নিয়ে এসেছি আমাদের সময়ে।

এসময় বিনিয়োগ শিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগারী এবং বাজার উভয়ের জন্য। সেজন্য স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে বিনিয়োগ শিক্ষা কীভাবে যুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

ডিএসই চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে মার্কেট ক্যাপিটালও বেড়েছে। গত বছর বাজার মূলধল ছিল ৫ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এর পরিমাণ সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকা। বর্তমান কমিশন গভর্নেন্সে বেশ মনযোগী হয়েছে। এটিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে জেনে বুঝে বিনিয়োগ করা লোক অনেক কম। একইসঙ্গে খাতটিতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। বাজারে গুটিকয়েক মানুষের পদচারণা রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও অনেক কম। এছাড়া পলিসি মেকারে আরও বেশি মনযোগ বাড়াতে হবে।

এসময় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যাংক সঠিক জায়গা নয়। তাই ভবিষ্যৎ অর্থনেতিক লক্ষ্য অর্জনে পুঁজিবাজার ছাড়া কোনো গতি নেই। দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। বর্তমানে আমরা অর্থনৈতিক ক্রাইসিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একটি দেশের প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ইআরএফের সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্ব সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুস রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি আজম যে চৌধুরী এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআরএফ সদস্য ও মোফাজ্জল হক।

এমআই/এসএসএইচ/