গ্যাস কোম্পানি জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমসকে (জেজিটিডিএস) বিরোধপূর্ণ ৯০ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৪২৩ টাকার অর্থ পরিশোধ করবে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় (গত ২ মে-২ জুনের মধ্যে) প্রাথমিকভাবে আগামী এক মাসের মধ্যে ১০ কোটি টাকা দিবে। বাকি টাকা পরিশোধ করবে আটটি কিস্তিতে। প্রতিটি কিস্তি হবে তিন মাস পর পর। এর ফলে বন্ধ হচ্ছে না গ্যাস সরবরাহ।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কোম্পানি সচিব কাজী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নির্ধারিত ট্যারিফ অনুযায়ী জেজিটিডিএসকে বিরোধপূর্ণ ৯০ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৪২৩ টাকা পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছে উচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আমরা অর্থ পরিশোধ করব।

মঙ্গলবার (৪ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে বলা হয়, গ্যাস বিক্রি চুক্তি (জিএসএ) অনুযায়ী জেজিটিডিএস ২০০৩ সাল থেকে লাফার্জহোলসিমের কাছে গ্যাস বিক্রি করছে। হঠাৎ করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ২০১৫ সালে গ্যাসের ওপর নতুন করে ট্যারিফ নির্ধারণ করে। কিন্তু লাফার্জহোলসিম জালালাবাদকে নতুন ট্যারিফ হিসেবে গ্যাসের দাম দেয়নি।

চুক্তি অনুসারে অতিরিক্ত দাম দেবে না বলে জালালাবদকে জানায় লাফার্জ। এরপর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি জালালাবাদ লাফার্জহোলসিমকে আগামী ২ মাসের মধ্যে বিইআরসি কর্তৃক নির্ধারিত টাকা পরিশোধ না করলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে চিঠি দেয়। এই চিঠি পাওয়ার পর ২ ফেব্রুয়ারি লাফার্জহোলসিম গ্যাস নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক আদালত ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড-ল (ইউএনসিআইটিআরএএল) তে সালিশের জন্য আবেদন করে।

তবে এই সময়ে যাতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ না করা হয় সেজন্য দুই মাসের মধ্যে জালালাবাদের অর্থ পরিশোধ না করলে গ্যাস বন্ধ করে দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্তের স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করে লাফার্জ। আদালত আন্তর্জাতিক আদালতের আরবিট্রেশনের রায় না হওয়া পর্যন্ত জেজিটিডিএসের বিরোধপূর্ণ ৯০ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৪২৩ টাকা প্রদান করা হবে মর্মে একটি ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়ার রায় দেন। পাশাপাশি গ্যাস সংযোগ সচল রাখার নির্দেশনা দেয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করে জেজিটিডিএস। এ বিষয়ে শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত জালালাবাদকে ৯০ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৪২৩ টাকা পরিশোধ করতে লাফার্জহোলসিমকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আদালতে যদি লাফার্জহোলসিমের পক্ষে রায় আসে, তবে এই টাকা অন্য পাওনা হিসেবে পরিশোধ করতে পারবে লাফার্জ।

বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জ ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টাকা ৫ বছর ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ক্লিংকার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি দেশের মোট চাহিদার ২০ শতাংশ উৎপাদন করে।

এমআই/এসএসএইচ