একমি পেস্টিসাইডের প্লেসমেন্ট শেয়ারে অনিয়মের অভিযোগ দুদকে পাঠাবে বিএসইসি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে অনিয়ম হওয়ায় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের পাঁচজনসহ মোট ১৪ ব্যক্তি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমিশন জানিয়েছে, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে একমি পেস্টিসাইডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হলেও বিপরীতে কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি তারা।
বিজ্ঞাপন
একই সঙ্গে কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনকালে মিথ্যা বা অসংগত তথ্য দেওয়ায় শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের নিবন্ধন সনদ বাতিল এবং প্রি-আইপিও ও আইপিও পরবর্তী নিরীক্ষার দায়িত্ব পালন করা দুটি অডিট ফার্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ৯৭৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বিএসইসি।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি বিএসইসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আলোকে ঢাকা পোস্টের এক প্রতিবেদনে একমি পেস্টিসাইডসের আইপিও পূর্ববর্তী ও পরবর্তী তহবিল ব্যবহারের অনিয়ম তুলে ধরা হয়। ‘বিনিয়োগকারীর ভোট চুরি করে একমি পেস্টিসাইডসের প্রতারণা!’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদন প্রকাশের এক সপ্তাহ পরেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একমি পেস্টিসাইডের চেয়ারম্যান শান্তা সিনহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রেজা-উর-রহমান সিনহা, পরিচালক আহসান হাবিব সিনহা, কে এম হেলুয়ার, কোম্পানি সচিব সবুক কুমার ঘোষ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সেলিম রেজা এবং আরও ৯ জন যথাক্রমে— ছাগলকান্ডের মতিউর রহমান, মো. আফজাল হোসাইন, তোফাজ্জাল হোসাইন ফরহাদ, জাবেদ এম মতিন, আঞ্জুমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার, তৌহিদা আক্তার, রুহুল আজাদ এবং রানা ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দুদকে অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একই সঙ্গে এসকে টিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস লিমিটেড, চট্টগ্রাম প্লাস্টিক অ্যান্ড ফিসারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটেল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আবেদন জানানো হবে।
এদিকে কোম্পানিটির আইপিও ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে মিথ্যা বা অসংগত তথ্য দাখিলের মাধ্যমে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে ব্যর্থতার দায়ে শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের নিবন্ধন সনদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে কমিশন সভায়।
এ ছাড়া, কোম্পানিটির প্রি-আইপিও নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির বাস্তব আর্থিক অবস্থা তুলে ধরার ব্যর্থতায় নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্য না দেওয়ায় নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এমএমএইচ/এমজে