পুঁজিবাজারে একদিনে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পতন
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে অধিকাংশ সিকিউরিটিজে দরপতন হয়েছে। এদিন যে কয়টি সিকিউরিটিজের দর বেড়েছে, তার চেয়ে ২৩ গুণ বেশি সংখ্যকের দরপতন হয়েছে। এতে এক্সচেঞ্জটির সবগুলো মূল্যসূচক কমেছে।
এর মধ্যে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ১২৩ পয়েন্ট কমেছে, যা একদিনের বিবেচনায় সূচকটিতে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পতন। এই পতনে সূচকটি অবস্থান সাড়ে ৪ মাস পিছিয়ে গেছে। তবে এক্সচেঞ্জের লেনদেনের পরিমাণ আজ কিছুটা বেড়েছে।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) এদিন অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন ও সবগুলো মূল্যসূচক কমেছে। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটির লেনদেনেও ভাটা পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে আজ মোট ৩৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১৫টির। বিপরীতে কমেছে ৩৫২টির। দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতন হওয়া সিকিউরিটিজগুলোর সংখ্যা ২৩ দশমিক ৪৬ গুণ বেশি। এদিন ১৭টি সিকিউরিটিজের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দরপতন হওয়া সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৮৮টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭৭টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৮৭টি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১২৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। বুধবার লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে। সূচকটির আজকের অবস্থান গত ২৩ জুনের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ওইদিন সূচকটি ৪ হাজার ৬৯৫ পয়েন্টে ছিল।
বিজ্ঞাপন
ডিএসইএক্স সূচকটি এর আগে গত ৭ মে দিনের ব্যবধানে ১৫০ পয়েন্ট কমেছিল, যা ছিল চলতি বছরে সূচকটির একদিনের সর্বোচ্চ পতন। ওইদিন ৪ হাজার ৯৫২ পয়েন্ট থেকে ৪ হাজার ৮০২ পয়েন্টে নেমেছিল সূচকটি। এছাড়া, সূচকটি একদিনে গত ১৯ অক্টোবর ৭৫ পয়েন্ট, ১২ অক্টোবর ৮২ পয়েন্ট এবং ১১ সেপ্টেম্বর ৬৫ পয়েন্ট কমেছিল।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস একদিনের ব্যবধানে ২৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমে ৯৭৭ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। মঙ্গলবার সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৬ পয়েন্টে। আর ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫২ কমে ১ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে নেমেছে। গতকাল সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে।
তবে ডিএসইতে আজ আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৯৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। এদিন মোট ৩৮৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়েছে। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে ২৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছিল।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ মোট ১৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২০টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৩৬টির। আর ৪টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হওয়ায় সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই আজ ২১৭ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৪০১ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ১২৮ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে নেমেছে। এছাড়া, সিএসই ৫০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬ পয়েন্টে, সিএসই ৩০ সূচক ১৫৩ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১৭৬ পয়েন্টে এবং সিএসআই সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ৮৪৪ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে আজ এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। গতকাল সিএসইতে ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছিল।
এমএমএইচ/এসএম