রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি পিএলসির ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচটি ব্যাংকের স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে ১৯৩ কোটি ৪ লাখ টাকা রয়েছে। আমানত নগদায়নে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে ইতিবাচক সাড়া পায়নি কোম্পানিটি। ফলে এ আমানত উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে বলে মতামত দিয়েছে কোম্পানিটির নিরীক্ষক এমএম রহমান অ্যান্ড কোম্পানি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ও মাহমুদ সবুজ অ্যান্ড কোম্পানি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।

ব্যাংকগুলো হলো, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও বেসরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি।

নিরীক্ষকরা তাদের মতামতে বলেছেন, ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত ২৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে পদ্মা অয়েলের ১ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। এর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৭৯ কোটি ৫৩ লাখ, ইউনিয়ন ব্যাংকে ৫৫ কোটি ৮৬ লাখ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে ৩৫ কোটি ৫৮ লাখ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১৬ কোটি ৩ লাখ ও ন্যাশনাল ব্যাংকে ৬ কোটি ৫ লাখ টাকা। আমানত নগদায়নে ওই পাঁচটি ব্যাংকের কাছে চিঠি দিয়েছিল পদ্মা অয়েল। তবে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে প্রথম চারটি ব্যাংক বর্তমানে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আর ন্যাশনাল ব্যাংক উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে লোকসানে রয়েছে।

নিরীক্ষকরা আরও জানিয়েছেন, ব্যাংকে রাখা আমানত থেকে ২২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বিপরীতে অগ্রিম আয়কর ও শুল্কসহ ১৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা সুদ আদায় করতে পেরেছে পদ্মা অয়েল। ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা এখনো বকেয়া রয়েছে। বাকি টাকার জন্য চিঠি দিয়েও ব্যাংকগুলো থেকে সাড়া পায়নি পদ্মা অয়েল।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে চলতি ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পদ্মা অয়েলের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ১২ টাকা ৬৭ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯০ টাকা ৮৯ পয়সায়।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৪-২৫ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে পদ্মা অয়েলের ইপিএস হয়েছে ৫৭ টাকা ৩০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪১ টাকা ৫৯ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির এনএনভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৭৪ টাকা ৮৬ পয়সায়।

সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে পদ্মা অয়েলের ইপিএস হয়েছে ৪১ টাকা ৫৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২০৩ টাকা ৪৬ পয়সায়।

১৯৭৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পদ্মা অয়েলের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ১৭৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৭৫০। এর ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া সরকারের কাছে ৫০ দশমিক ৩৫, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৩০ দশমিক ৮১, বিদেশি বিনিয়োগকারী দশমিক শূন্য ৬ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

এমএমএইচ/এসএম