২০১০ সালের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বরাদ্দকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বিশেষ কোটার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। নতুন করে যাতে কোটার মেয়াদ না বাড়ানো হয় সেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কারণ দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ গোষ্ঠী সাধারণ বিনিয়োগকারীদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে আসছে। আর আইপিওর এই কোটা যুগ ধরে চলতে পারে না। তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রকৃত পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

এছাড়াও এই কোটা পদ্ধতি করা হয়েছে, যখন আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা লটারিতে খুব বেশি শেয়ার পেত না। কিন্তু আইপিওর নতুন পদ্ধতিতে এখন সবাই শেয়ার পাচ্ছেন। ফলে এখন আর ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কোটা রাখাও প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, এখন আর বিশেষ কোটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। যেহেতু ৩০ জুন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কোটার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ফলে নতুন করে আর বাড়ানোর উচিত নয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আইপিওর ক্ষতিগ্রস্ত কোটায় এখন খুব বেশি আগ্রহ নেই। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর বিশেষ কোটার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এ সুবিধা তো অনন্তকাল দেওয়া যাবে না, তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতি অবিচার করা হবে। কী করা যায় বিষয়টি নিয়ে কমিশন ভাবছে।’

উল্লেখ্য, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০২০ সালের ১ জুলাই পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিশেষ কোটা সুবিধা এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। যার এর মেয়াদ শেষ হয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। পুঁজিবাজারের মহাধস কাটিয়ে উঠতে ২০১২ সালের মার্চে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বা স্কিম ঘোষণা করে সরকার। ওই স্কিমের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা রাখা হয়। এরপর টানা ৯ বছর এই কোটা সুবিধা ভোগ করেছেন গুটি কয়েক বিনিয়োগকারী।

সার্বিক বিষয়ে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিওর বিশেষ কোটা মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এ সময়ের মধ্যে যেসব কোম্পানির আইপিওর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য কোটা সুবিধা থাকবে। সেই হিসেবে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কোটা থাকবে।’

এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার আইপিওর শেয়ার বণ্টনের খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্থির মূল্য বা ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে, সেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হবে ২০ শতাংশ শেয়ার। মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য থাকবে ১০ শতাংশ। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য থাকবে ৭০ শতাংশ শেয়ার।

এমআই/ওএফ