শেষ তিনদিন সূচকের সামান্য উত্থান আর প্রথম দুইদিন বড় দরপতনের মধ্যদিয়ে আরো একটি সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার।

আলোচিত (১৭ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি) সপ্তাহে লেনদেন, সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমেছে। আর তাতে টানা তিন সপ্তাহ মূলধন বৃদ্ধির পর পুঁজিবাজারে ছন্দপতন হয়েছে। এই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম দুদিন পুঁজিবাজারে মূল্যসংশোধন হয়েছে। এরপর তিনদিন ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচক বাড়লেও শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল। ফলে ক্রেতা সংকটে লেনদেন কমেছে। তবে আগামী সপ্তাহে এই সংকট কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা তাদের।

আলোচিত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টির দাম বেড়েছে, কমেছে ২২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির শেয়ার ও ইউনিটের।

আর তাতে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৮২৪ কোটি ৮৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৪৯ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৩৪৩ কোটি ২৯ লাখ ৪৬ হাজার ৯২১ টাকা। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা কম লেনদেন হয়েছে। যা শতাংশের হিসেবে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। যা মোট লেনদেনের ৬৯দশমিক ২৬ শতাংশ।

বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৩৬ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা কমে ৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৯ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এর আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ১ হাজার ৭০৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের ৯ হাজার ৪২০ কোটি ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার ২৩০ টাকা মূলধন কমল।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯২ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৪১ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৬ টাকা।

লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৩টির, কমেছে ১৮৫টির এবং অপরবির্তত রয়েছে ৪৫টি শেয়ারের দর। আর তাতে বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২১পয়েন্টে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ও ইসলামী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বিডি, জিবিবি পাওয়ার, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, আনলিমা ইয়ার্ন ডাইং, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স এবং এডিএন টেলিকম লিমিটেড।

লেনদেনের শীর্ষে ছিল, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ,আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ  ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি।

এমআই/এসআরএস