অর্থসঙ্কট ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন জটিলতার কারণে প্রায় ১০ মাস ধরে বন্ধ প্রাথমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি। নতুন দায়িত্ব পাওয়া ডাক বিভাগের মোবাইল লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’এর মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণের উদ্বোধন সোমবার।

উপবৃত্তির বিতরণের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এরপর সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি বিতরণ শুরু হবে।

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ১০ মাস পর গত বছরের (২০২০ সাল) এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিনমাসের কিস্তির উপবৃত্তির টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক উপবৃত্তি (তৃতীয় পযায়ে) প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ উদ্বোধনের পরপরই নগদের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ শুরু হবে। আরও দুই কিস্তি অর্থাৎ ৬ মাসের উপবৃত্তির টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। টাকা পাওয়া মাত্রই আমরা বিতরণ করতে প্রস্তুত।

তিনি জানান, ডাটা এন্ট্রির সমস্যা সমধান হয়েছে। চা বাগানসহ কিছু শিক্ষার্থী ডাটা এন্ট্রির বাইরে রয়েছে তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় উপবৃত্তি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে প্রাথমিকের উপবৃত্তির টাকা বিরতণ করেছিল রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশ। গত ১৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণের জন্য সার্ভিস চার্জ দশমিক ৭৫ পয়সা ধরে নগদের সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প।
চুক্তি অনুযায়ী, জিটুপি (সরকার টু পাবলিক) পদ্ধতিতে উপবৃত্তি টাকা বিতরণ করবে নগদ। চুক্তিতে উপবৃত্তির সুবিধাভোগী অর্থাৎ শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন এবং শিক্ষার্থীর মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ডাটা এন্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়।

২৮ ডিসেম্বর থেকে ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরুর পর নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। এরমধ্যে অন্যতম স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন না থাকা। ভর্তির সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন না নেওয়া, অভিভাবকদের কাছে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন না থাকা। এছাড়াও তারা ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ডে জন্মনিবন্ধন আনতে গিয়েও সার্ভার জটিলতায় পড়েছে।

এরসঙ্গে নগদের সার্ভারে সমস্যা, মফস্বল এলাকায় ইন্টারনেটের ধীরগতি, মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের খুঁজে না পাওয়ার কারণে ডাটা এন্ট্রির কাজ চলে কচ্ছপ গতিতে। শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির হার কাঙ্ক্ষিত না হওয়ায় এ পর্যন্ত চার দফা সময় বাড়ানো হলো। সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য সার্ভারে ইনপুট দেওয়ার সময় ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমদিকে নগদের সার্ভার সমস্যা, পরে জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত নানা জটিলতায় আশাব্যঞ্জক ডাটা এন্ট্রি হয়নি। সার্ভারের সমস্যা অনেকটা কেটে যাওয়ায় পরে এ সমস্যার সমাধান হয়।

সর্বশেষ নতুন সমস্যা তৈরি হয় চা বাগানের শিশুদের ডাটা এন্ট্রি নিয়ে। কারণ চা বাগানের কাজ করা বাবা-মা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় এসব শিশুদের তথ্য এন্ট্রি দেওয়া যাচ্ছে না। তবে যারা জন্ম সনদের জটিলতায় তথ্য এন্ট্রি করতে পারবে না তাদের জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে উপবৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এনএম/এসএম