ভুয়া পিএইচডি, আর্থিক দুর্নীতিসহ ও ব্যাপক অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ ৩ শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। কলেজের সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যানারে এই দাবি তোলা হয়েছে।  

দাবি আদায়ে ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন তারা। শিক্ষকদের সঙ্গে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষার্থীরাও।
 
আজ শনিবার সকাল থেকেই কলেজ ক্যাম্পাসে তারা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মিছিল করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে আইডিয়াল কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হাসান বলেন, অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী, গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামানের পদত্যাগের দাবিতে আমরা সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছি। শিক্ষার্থীরাও আমাদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে কলেজে বিক্ষোভ করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করে তাকে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।  

কী অভিযোগ অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে 
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পান। যোগ দেওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা শুরু হয়। মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী, গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামানসহ আরও কয়েকজন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষ রাজধানীর সুপ্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করেছেন।

এ শিক্ষকেরা অধিকাংশ সময় শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে বিরত থেকে অধ্যক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন অবৈধ/অনৈতিক কাজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ও তা সম্পাদন করে থাকেন। তারা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ডেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, ভর্ৎসনা করা, কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া, চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া ইত্যাদি হুমকি দিয়ে প্রতিষ্ঠানে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, অধ্যক্ষ কলেজে যোগ দেওয়ার প্রথম বছরেই তার অনৈতিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে চারজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেন, একাধিক কর্মচারীকে চাপ প্রয়োগে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। আরও অনেক শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছেন। অধ্যক্ষ সম্পর্কে যতটা জানা যায়, পূর্বে তিনি যেসব কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, প্রতিটিতেই দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের কারণে তিনি অভিযুক্ত ও তিরস্কৃত হয়েছেন।

অধ্যক্ষ, শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, তরুণ কুমার গাঙ্গুলী অনলাইনে বা কোনো জালিয়াতির মাধ্যমে মালিবাগ মোড়ে অবস্থিত ‘লিনকলন্স’- হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (শাহজালাল টাওয়ার ৬ তলা, ৮০/এ/১, সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড) নামে প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ডক্টরেট ডিগ্রির সার্টিফিকেট কিনে তা কলেজে জমা দিয়ে পদোন্নতি ও বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। 

শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনের পুরো প্রতিবেদন পড়তে এখানে ক্লিক করুন। 

এএজে/এনএফ