যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে অসদাচরণ ও পলায়নের কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুন) তাকে চাকরিচ্যুত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। এ কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী, ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব না দেওয়ায় বিধি অনুযায়ী বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়। তদন্তে মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ তার স্থায়ী ও কর্মস্থলের ঠিকানায় পাঠানো হলে ‘প্রাপক দেশে নেই’ বলে ডাক বিভাগ খামের গায়ে লাল কালি দিয়ে লিখিতভাবে জানায়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যেহেতু মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাই সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী গুরুদণ্ড হিসেবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে সরকারি কর্ম কমিশনও (পিএসসি) একমত পোষণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তকরণে সানুগ্রহ সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। সে অনুযায়ী, মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

২০০৯ সালে নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর টানা ৮ বছর তার এপিএসের দায়িত্ব পালন করেন মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। ২০১৮ সালের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও বাড়ৈ ২০২০ সালে খুলনার ব্রজলাল কলেজে পদায়ন পেয়েছিলেন। ওই সময় নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাকে এপিএস পদ থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপপরিদর্শক (কলেজ) পদে ছিলেন তিনি। 

২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে খুলনার ব্রজলাল কলেজে (বি.এল. কলেজ) পদায়ন করা হয়। আদেশে তাকে ওই বছরের ১২ এপ্রিলের মধ্যে যোগদান করতে বলা হলেও তিনি যোগদান করেননি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তাকে পলায়নে অভিযুক্ত করে শোকজ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে জানুয়ারিতে তাকে আবার শোকজ করা হয়। শোকজে মন্ত্রণালয় বলেছিল, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদায়ন-বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিভাগীয় মামলার পর দীর্ঘদিন ধরে যাচাই-বাছাইসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এএজে/জেডএস