উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সনদ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম, ল্যাব, নিজস্ব ক্যাম্পাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১০টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ৬৩টি বিষয়ে শর্ত পূরণে সনদ দেওয়া হবে। বুধবার (২০ জুলাই) থেকে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।  

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, সদস্য (অ্যাক্রেডিটেশন) অধ্যাপক ড. এস. এম. কবির, সচিব অধ্যাপক এ. কে. এম. মুনিরুল ইসলাম, সদস্য অধ্যাপক ড. গোলাম শাহি আলম, অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারীসহ বিএসি’র অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক সম্মেলন ও অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করা হবে আগামী বুধবার। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনে ‘দ্য ইম্পর্ট্যান্স অ্যান্ড সিগনিফিকেন্স অব রিটেশন ইন হায়ার এডুকেশন’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নিউজিল্যান্ডের ম্যাসি ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. টিম জে পারকিনসন। উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।

তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েটদের সুসংহত ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত একাডেমিক প্রোগ্রাম এবং এসব প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (বিএসি) কার্যক্রম শুরু করেছে। অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম বিষয়ে অংশীজনদের উদ্বুদ্ধকরণ ও উচ্চ শিক্ষায় গুণগতমান নিশ্চিত করতে অংশীজনদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিগত বছরগুলোতে কাউন্সিল আয়োজিত মোট ১১৯টি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৫ হাজার ৪৩৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।  

তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল ত্রিশ জন কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (কিউএ) প্রফেশনালস নির্বাচন করেছে। এসব কিউএ প্রফেশনালস অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি ও কাউন্সিলের অন্যান্য কাজে সহযোগিতা করবেন। অদূর ভবিষ্যতে অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হলে আরও বহু সংখ্যক কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স প্রফেশনালস প্রয়োজন হবে। উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেসবাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৭ পাসের জন্য আগে ৫ বছর লেগেছে। এরপর সেখানে জনবল নিয়োগ ও কার্যক্রম শুরু করতে আরো কয়েক বছর কেটে গেছে বলে এখানো নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন সনদের জন্য যারা আবেদন করবে শর্ত অনুযায়ী তাদের ৬৩টি বিষয়ের উপর কাজ করতে হবে। এরপর যাচাই-বাছাই করে তাদের সনদ দেওয়া হবে। বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সনদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যারা পিছিয়ে রয়েছে সনদের জন্য তারাও মান নিশ্চিত করে সনদের জন্য প্রস্তুতি নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সনদ না নিলে কি হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা নিজেদের মান ঠিক করতে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। এর মাধ্যমে আমরা দক্ষ ও কর্মঠ লোক নিয়োগ দেব। অ্যাক্রেডিটেশন সনদ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। সনদ নিতে আমরা কাউকে চাপ দেব না। তবে আমরা উৎসাহিত করছি। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই নিজ থেকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ নিতে এগিয়ে আসবে। শিক্ষার মান নিশ্চিতে সবাইকে এক ছাতার নিচে আসতে হবে।

এএজে/জেডএস