বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ই-রিকুইজিশন (শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ) চলছে। শূন্য পদের চাহিদা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘ইবতেদায়ী মৌলভী’ (জুনিয়র মৌলভী) ও ‘ইবতেদায়ী শিক্ষক’ (জুনিয়র শিক্ষক) পদ দুটিতে জটিলতা নিরসনে ব্যবস্থা নিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন ১-১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী চাকরিপ্রত্যাশীরা। 

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে তারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, এনটিআরসিএ কর্তৃক ১-১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ইবতেদায়ী মৌলভী (জুনিয়র মৌলভী) ও ইবতেদায়ী শিক্ষক (জুনিয়র শিক্ষক) পদের সনদধারীরা গত তিন বছর ধরে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগের অপেক্ষায় আছেন।

এনটিআরসিএ গত ২৩ জুন ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রমের প্রাথমিক অংশ হিসেবে দেশের মাদ্রাসাগুলো থেকে শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহের জন্য ই-রিকুইজিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যা ২৬ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও দেখুন >> ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি : শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ শুরু ২৬ জুন

এতে বলা হয়, বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা অনলাইনে নির্দিষ্ট ই-রিকুইজিশন পাঠানো শুরু করেন। কিন্তু ই-রিকুইজিশনের পদ তালিকায় ইবতেদায়ী মৌলভী (জুনিয়র মৌলভী) ও ইবতেদায়ী শিক্ষক (জুনিয়র শিক্ষক) এই দুই পদের অপশন পাননি। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠান প্রধানরা এনটিআরসিএতে লিখিত অভিযোগ দেন।

স্মারকলিপিতে চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, লিখিত অভিযোগের পরও সমাধান না হওয়ায় যোগাযোগ করলে এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জুনিয়র মৌলভী পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে জানান, যা সঠিক নয়। শূন্য পদের চাহিদা দিতে না পারায় ‘জুনিয়র মৌলভী’ সনদধারীরা ওই পদে আবেদন করতে পারছি না। 

তারা বলেন, ‘জুনিয়র মৌলভী’ পদটি পরিবর্তন করে ‘ইবতেদায়ী মৌলভী’ করা হয়েছে। ইবতেদায়ী মৌলভী ও জুনিয়র মৌলভী পদ দুটির পদবি আলাদা হলেও মূলত দুটি পদ একই বিষয়ের। একইভাবে জুনিয়র শিক্ষক পদ পরিবর্তন করে ইবতেদায়ী শিক্ষক পদ করা হয়েছে। এতে এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর নাম পরিবর্তন করেছে। অধিদপ্তর অনুমতি দিলে পদ দুটি ই-রিকুইজিশনে যোগ করতে এনটিআরসিএর কোনো সমস্যা নেই।

আরও দেখুন >> শিক্ষক নিবন্ধনধারী ৪৮৩ জনকে নিয়োগে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিবন্ধন সনদধারী চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, আমরা এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষকে বলেছি, মাদ্রাসা অধিদপ্তর নতুন তৈরি হওয়ার পদের পরিপত্র জারি করেছে সেখানেও জুনিয়র মৌলভী কথাটা উল্লেখ রয়েছে। তাতেও এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ এই অপশন দিতে নারাজ। তাই মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত ই-রিকুইজিশনে পদ দুটি যুক্ত করা সম্ভব নয়। আর প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক প্রেরণও অসম্ভব। এ জটিলতা নিরসন না হলে শিক্ষকতায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন অঙ্কুরেই শেষ হয়ে যাবে অনেকের। মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখায় ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জনই এ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নেওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে মাদ্রাসা শিক্ষা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।

এ বিষয়ে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনধারী রিয়াদ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপিও নীতিমালা সংশোধনের কারণে ২ হাজার ১০০ জুনিয়র মৌলভী ও ৫ হাজার জুনিয়র শিক্ষক এই জটিলতার শিকার। এ সমস্যার সমাধানে প্রথমে এনটিআরসিএতে যাই। তখন বলা হয়েছিল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু এখন তারা বলছে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে যেতে। ওখানে কিছু করতে পারলে করবে, এনটিআরসিএ কিছু করতে পারবে না। বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তিতে এ সমস্যা থাকার পরও নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু এখন তারা বলছে, আগে যা হওয়ার হয়েছে, এখন আর হবে না। আমরা সমস্যা সমাধানে আজ অধিদপ্তরে গিয়েছি।

তিনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আমাদের কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, কাগজপত্র আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

এএজে/ওএফ