তিন দফা দাবিতে টানা ৪৯তম দিনের মতো গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী নিয়োগবঞ্চিতরা। গত ৫ জুন রাজধানীর শাহবাগ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের সামনে গণঅনশন শুরু করেন তারা। 

জানা গেছে, এ পর্যন্ত দুই হাজার নিবন্ধিত সনদধারী দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে অনশনে অংশ নিয়েছেন। ৫০ জনের বেশি অনশনকারী এ পর্যন্ত অসুস্থ হয়েছেন। পাঁচজন এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে অনেকে আবারো ফিরছেন অনশনে। 

নিজ নিজ খরচে ঢাকায় অবস্থান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ায় অনেকে পড়ছেন বিপাকে। অনেকে খেয়ে না খেয়ে ঢাকার বিভিন্ন মসজিদে রাত্রিযাপন করে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

অনশনরত নিবন্ধনধারীদের তিন দফা দাবি হলো—এনটিআরসিএর নিবন্ধিত সনদধারীদের প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে, বৈধ সনদধারী চাকরিপ্রত্যাশীদের নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে, ইনডেক্সধারীদের প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।

এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে বৈঠকে বসার সুযোগ প্রত্যাশা করছেন নিয়োগবঞ্চিতরা।

প্যানেল-প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আমির হোসেন বলেন, একের পর এক গেজেট আর আদেশে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিয়োগে জটিলতার মধ্যে রয়েছেন হাজার হাজার নিবন্ধনকারী। এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতা আধুনিক সময়োপযোগী একটি শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিকে জটিল থেকে জটিল করে তুলেছে। একটা অংশ আদালতে গেলে আটকে যাচ্ছে আরেকটা অংশের নিয়োগ। আমরা এর সমাধান চাই।

সাধারণ সম্পাদক জি.এম ইয়াছিন বলেন, অনশন কর্মসূচির আজ ৪৯তম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এত দিনেও এনটিআরসিএ অথবা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ দেখা করতে বা আমাদের কথা শুনতে আসেনি। টানা অনশনের কারণে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে অথবা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি নিজেও অসুস্থ। পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। আমরা সবাই সত্যি মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা চাই, সরকার কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথা বলতে। সে সুযোগও পাচ্ছি না। আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আশা করি তিনি আমাদের আশাহত করবেন না।

এইচআর/আরএইচ