ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর করে কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (৮ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী চিকিৎসক এ. কে. এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে এই হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহবাগ থানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাজ্জাদ শহীদ মিনারে বসেছিলেন। এমন সময় ছয় থেকে সাত জনের একটি দল তার কাছে আসে, যাদের গায়ে ঢাবির লোগো সম্বলিত টি-শার্ট ছিল। এ সময় তারা আইডি কার্ড দেখতে চান, কিন্তু তিনি আইডি মেডিকেলে রেখে আসার কথা জানালে তাকে ব্যাপক মারধর শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কানে থাপ্পর মারায় তার কানের পর্দার আশপাশে রক্তক্ষরণ হয়। এরপর থেকে তিনি ডান পাশের কানে কম শুনতে পাচ্ছেন। এছাড়া মারধরের সময় নাকে আঘাত লাগার কারণেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাজ্জাদ বলেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে আমি শহীদ মিনারে বসেছিলাম, তখন ঢাবির লোগো সম্বলিত টি-শার্ট গায়ে ছয় থেকে সাত জন এসে আমার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আমার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। আমার কাছে পরিচয়পত্র নেই জানালে তারা আমাকে বলে, ‘পরিচয়পত্র নেই কেন? আমাদের কাছে তো পরিচয়পত্র আছে।’ তখন আমি বললাম, ‘সবাই কী সবসময় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরে?’ এই কথা বলার পর সঙ্গে সঙ্গে আমাকে একজন থাপ্পড় মেরে বসে। এরপর আরো দুই তিন জন এসে আমাকে চড়-থাপ্পর মারা শুরু করে।

তিনি বলেন, মারধরের একপর্যায়ে আমি চিৎকার করে বলে উঠি, ‘আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে আমার পরিচয়পত্র দেখে আসতে পারেন।’ তখন তারা আমাকে দ্রুত ওই স্থান থেকে বিদায় করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। আমি চলে যাওয়ার সময় যে যেভাবে পারছিল, আমাকে মারধর করছিল এবং চলে যেতে জোর করছিল। ঠিক এই সময় কেউ একজন আমার কানের ওপর জোরে থাপ্পর দিলে আমি বসে পড়ি। বসে কেন পড়লাম, এই অপরাধে একজন জুতা পায়ে আমার মুখে লাথি মারে। এ কারণে আমার নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। এরপর আমি চলে যেতে চাইলে যাওয়ার পথে যে যেভাবে পেরেছে আমাকে মারধর করেছে রিকশায় ওঠার আগ পর্যন্ত। যারা মারধর করেছে তাদের প্রায় সবার গায়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত টি-শার্ট ছিল।

ভুক্তভোগী সাজ্জাদ বলেন, ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমি কল্পনাও করিনি। পরে জানলাম এমন ঘটনা আরো অনেকের সঙ্গে ঘটেছে। আমি এর যথাযথ বিচার চাই। অভিযোগের পাশাপাশি আমি মামলাও করব।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ সংক্রান্ত এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ এবং তথ্য প্রমাণ পেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে।

এইচআর/জেডএস