ছাত্রলীগের ভুল ব্যাখ্যায় কোনো বাছ-বিচার না করে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে অভিযোগ করেছেন ১৩ ঘণ্টা পর শাহবাগ থানা থেকে ছাড় পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মিফতাহুল মারুফ।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মারুফ বলেন, আমি কখনও চিন্তাও করতে পারিনি যে আমার সঙ্গে এমনটি ঘটতে পারে। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে একটি পলিটিক্যাল আলাপ তুলে ছিলাম তার সারমর্ম এরকম ‘কোনো সরকারের আমলে যদি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, সে ঘটনা ঘটার পেছনে সরকার দায়ী আছে কি না এটা নিয়ে অনেক আলাপ থাকতে পারে।’ চ্যাট গ্রুপে দেওয়া আমার এই বক্তব্য কোনোভাবে ছাত্রলীগের হাতে যায়। সেটা ইস্যু বানিয়ে হল ছাত্রলীগ আমাকে হল প্রশাসনের কাছে নিয়ে যায়। হল ছাত্রলীগের দেওয়া ভুল ব্যাখ্যায় হল প্রভোস্ট কোনো বাছ-বিচার না করে আমাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে।

তিনি বলেন, আখতার ভাই যখন আমার সঙ্গে দেখা করতে যায়, আমি তখন তাকে বলেছি ঠিক আছি। কিন্তু আমাকে শারীরিক নির্যাতন না করা হলেও আমাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এমন অবিচারের অবসান চাই।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীকে থানায় দিল ঢাবি প্রশাসন, ছেড়ে দিল পুলিশ

তিনি আরও বলেন, আমার বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র, বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মুক্তি পাই। আমার সঙ্গে হওয়া এ অন্যায় যেন আর কারো সঙ্গে না হয়। আমাকে থানায় নেওয়ার পর থেকে এই অবধি যে প্রতিবাদ হয়েছে সেটা যেন সামনের দিনেও বজায় থাকে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত সন্দেহে মারুফকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. বিল্লাল হোসেন। এরপর পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, তার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তার এলাকায় খোঁজ নিয়েছি। তার পরিবারের বড় দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সংশ্লিষ্টতা আছে৷ তবে ব্যক্তিগতভাবে তার কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। সে যে মন্তব্য করেছে এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত মতামত। তাই আমরা তদন্তের পর তাকে একটি মুচলেকা দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।

কোনো তদন্ত না করেই কেন থানায় দেওয়া হলো— এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু তদন্ত করা সম্ভব আমরা সেটা করেছি। এরপর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। বাকি কাজ তারা করেছে।

এইচআর/এসএসএইচ