শুরুতে উদ্দেশ্য ভালো থাকলেও কোন এক রহস্যের বেড়াজালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বন্দি বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষকরা এনটিআরসিএ নিবন্ধিত চাকরি প্রত্যাশীদের ব্যাচভিত্তিক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।  

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। এছাড়াও নিজ নিজ নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রাখাসহ ইনডেক্সধারীদের প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থার দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জি এম ইয়াছিন বলেন, ১৩৬ দিন থেকে আমরা গণঅনশন, সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার স্মারকলিপি দিলেও আমাদের বিষয়টি সমাধানে কেউ এগিয়ে আসেনি।

তিনি বলেন, ২০০৫ সালের ২০ মার্চ এনটিআরসিএর মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করে। শুরুতে সনদের মেয়াদ পাঁচ বছর থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে সরকার জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে ২০০৬ সালে সনদের মেয়াদের সীমাবদ্ধতা বিলোপ করে একটি সংশোধনী আনে। শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন চেয়ারম্যান আশীষ কুমার সরকার এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, সব ক্ষেত্রেই এটিআরসিএ প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্রের মেয়াদ প্রার্থীর চাকরি যোগ্য বয়স পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এখানেই শেষ নয়, ২০০৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এটিআরসিএ প্রতিষ্ঠা করার সময় ১০ (১)ধারার উল্লেখ করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে যোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রণয়ন, নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন করিবে।

এরপর ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই গেজেটে ৩(ক) এর (১) ধারায় উল্লেখ করা হয়, কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর নভেম্বরের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেলাধীন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করবে। ৯ (ঘ) ধারায় উল্লেখ করা হয়, উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মেধাভিত্তিক মূল তালিকা ব্যতীত শূন্যপদের সংখ্যার অতিরিক্ত শতকরা ২০ শতাংশ প্রার্থীদের সমন্বয়ে অপেক্ষমাণ তালিকা করা যাবে এবং মৃত্যু, চাকরি ত্যাগ, অনিচ্ছুক বা অন্য কোনো কারণে পছন্দ হইলে উক্ত তালিকা হইতে শিক্ষক নিয়োগ হবে। 

উক্ত ধারাগুলো পর্যালোচনা করে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয় যে, এনটিআরসিএ শুরুতে উদ্দেশ্য ভালো থাকলেও কোন এক অজানা রহস্যের বেড়াজালে আজ বন্দি। এই অসহনীয় যন্ত্রণা ও করুণ হৃদয়বিদারক অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং এনটিআরসিএর অদূরদর্শিতা ও অনিয়ম থেকে পরিত্রাণের আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি এবং হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি আমীর হোসেনসহ ভুক্তভোগী প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষকরা।

আইবি/ওএফ