চলমান এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বাংলা-২ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জনপ্রিয় সাহিত্যিক আনিসুল হককে হেয় করার ঘটনায় প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

তাদের বোর্ডের আর কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। আগামী সপ্তাহে এ চিঠি পাঠানো হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা জানান, প্রশ্নপত্রটি প্রণয়নকারী ময়মনসিংহের মহাকালী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. সাখাওয়াত হোসেন এবং পরিশোধন বোর্ডের সভাপতি নাটোরের সিংড়া উপজেলার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পারভীন আক্তার ও সদস্য ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক শিউলী বেগমকে শোকজ করা হয়েছিল।

এর মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন তিনি আমিনুল হক লিখতে চেয়েছিলেন ভুলক্রমে আনিসুল হক লিখে ফেলেছেন। উদ্দীপকে যেহেতু নাম লিখতে হয় সেই হিসেবে তিনি নামটি লিখেছেন। এজন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। 

অপরদিকে মডারেটরদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তারা কেন প্রশ্নটি ঠিকভাবে দেখেননি। জবাবে দুই মডারেটই জানিয়েছেন, তারাও বিষয়টি সেভাবে খেয়াল করেননি। এ জন্য তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। 

এ প্রসঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকরা খুবই মর্মাহত। তারা তাদের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তবে তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে এবং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের আর বোর্ডের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রাখব না। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করব। মন্ত্রণালয় বাকি ব্যবস্থা নেবে।

কবে মন্ত্রণালয়ে এই চিঠি পাঠানো হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটি আমার কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। আমি আগামী সপ্তাহেই রিপোর্টটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। 

গত ৬ নভেম্বর বাংলার-২ এর কীর্তনখোলা সেটের ক-বিভাগের গদ্য অংশের সৃজনশীল প্রথম প্রশ্নে উদ্দীপকে লেখক আনিসুল হকের নাম উল্লেখ করে তাকে হেয় করে প্রশ্নে বলা হয়, ‘একুশে বইমেলায় তাড়াহুড়ো করে তিনি বই প্রকাশ করেন। পাঠকদের কাছে তার লেখা খাপছাড়া মনে হয়। ফলে পাঠকদের কাছে তিনি সমাদৃত হন না।’ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হলে গত ১০ নভেম্বর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। 

এমএম/এসকেডি