এক ঝাঁক প্রশিক্ষিত-দক্ষ শিক্ষক, সুবিশাল নিজস্ব ভবন, মনোরম শ্রেণিকক্ষ এবং নিজস্ব খেলার মাঠসহ শিক্ষাঙ্গনের সকল সুবিধার সমন্বয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ‘নবেল স্কুল এন্ড কলেজ’। অত্যাধুনিক ও বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।  

রাজধানীর আফতাবনগরের ই ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৪২ নম্বর বাড়িতে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়টি একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রযুক্তিনির্ভর সব সুবিধা নিশ্চিত করছে, অপরদিকে দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের বাস্তবমুখী পাঠদানে নিয়েছে বৈচিত্র্যময় পদক্ষেপ।

গাদা গাদা বইয়ের চাপ নয়। চাই খেলার ছলে বাস্তবমুখী ও পরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা। কিন্ডারগার্টেনের জনক বিখ্যাত জার্মান শিশু-শিক্ষানুরাগী ফ্রেডরিক উইলহেম অগাস্ট ফ্রোয়েবলের খেলার ছলের সেই পাঠদানের আদলে বাংলাদেশে কিন্ডারগার্টেন যাত্রা শুরু করলেও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ ও দক্ষ শিক্ষকের অভাবে তা বেহাল দশায় পরিণত হয়। তবে এসব সুবিধা নিশ্চিত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলার ছলে পাঠদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে নবেল স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।  

দেশের বেশিরভাগ স্কুল যেখানে উপযুক্ত পরিবেশ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, সেখানে প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায় ‘নবেল স্কুল এন্ড কলেজ’। 

আগামী ২৬ নভেম্বর দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে এক মনোজ্ঞ আয়োজনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করবে স্কুলটি।

নবেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও আফতাবনগর জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির সভাপতি আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, দেশে আধুনিক স্কুলিং চালু হলেও উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বাধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। ক্রমবর্ধমান এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মূল রসদ আমাদের দক্ষ শিক্ষক প্যানেল এবং উপযুক্ত পরিবেশ। আমরা এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে সব পরিকল্পনা সাজিয়েছি। 

আলমগীর হোসেন ঢালী

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র পাঠ্যনির্ভর পড়াশোনার গন্ডি থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীদের বিকশিত জীবনবোধেও উৎসাহ দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। সে কারণে স্কুলটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের সহ-শিক্ষা  কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি অভিভাবকদের সব চাহিদা একই ছাদের নিচে দিতে পারবো। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ মান নিয়ে এই স্কুল মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।

কেন আপনার সন্তানের জন্য নবেল স্কুল?
নিজস্ব ভবন : দেশের বেশিরভাগ স্কুলের নিজস্ব ভবন না থাকায় তাদের অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। এসব ব্যয় আবার নানাভাবে বহন করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়া নিজস্ব ভবন না থাকায় পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, কমন রুম, গেমিং জোনের মতো অত্যাবশ্যকীয় স্থাপনা থাকে না। 

বদ্ধ ঘরে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের শারীরিক নানা জটিলতা তৈরি হয়, তেমনি মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। 

খেলার মাঠ ও সুইমিং পুল : শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। স্কুলটিতে সুবিশাল খেলার মাঠ, পর্যাপ্ত খেলার সরঞ্জাম ও সুইমিং পুল রয়েছে। এছাড়া ইনডোর গেমসের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম। সুইমিং পুলের জন্য দক্ষ প্রশিক্ষক শিশুদের সাঁতার শিখতে সহায়তা করবেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। শুধুমাত্র সাঁতার না জানাই এই শিশুদের মৃত্যুর কারণ। ফলে শিশুদের সাঁতার শেখাতে পারলে এসব মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।  

অভিজ্ঞ শিক্ষক : শিশুকে বাস্তবমুখী এবং কার্যকরী শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ শিক্ষক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি মাথায় রেখে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক প্যানেল। এছাড়া নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি এ শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।  

প্রযুক্তিনির্ভর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুম : তথ্য-প্রযুক্তির এই ডিজিটাল যুগে দক্ষ হয়ে গড়ে ওঠার বিকল্প নেই। এ বিষয়টি মাথায় রেখে স্কুলটিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও এয়ার কন্ডিশন সুবিধা রাখা হয়েছে।

ধর্মীয় শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব : শিশুকে পার্থিব শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, গভীর জীবনবোধ ও ধর্মীয় বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে স্কুলটিতে আছেন অভিজ্ঞ হাফেজ। ক্লাসের শুরুতেই নুরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিশু প্রতিদিনের পাঠের সাথে একজন আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার : শিশুর বেড়ে ওঠার পেছনে যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ রয়েছে তার মাঝে সুষম খাদ্য অন্যতম। শিশুদের স্বাস্থ্যসম্মত ও উন্নতমানের ক্যান্টিন নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও কঠোর মনিটরিং।

ডিজিটাল হাজিরা : শিশু কখন স্কুলে প্রবেশ করেছে, কখন বের হয়েছে, তা সহ উপস্থিতি-অনুপস্থিতির সকল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিভাবকদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত করার সুযোগ রয়েছে। এতে শিশুর সার্বিক গতিবিধি বাসায় বসেও মনিটরিং করা সহজ হবে।

সমৃদ্ধ পাঠাগার ও ল্যাব : একমাত্র বইই মানুষের উন্নত চিন্তা, সুস্থ বিনোদন ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনের রসদ জোগাতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে স্কুলটিতে রাখা হয়েছে সুসজ্জিত লাইব্রেরি। একইসাথে অর্জিত জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ ও নেতৃত্ব দানের দক্ষতা গড়ে তুলতে স্কুলটিতে বিজ্ঞান ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব এবং বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে।

প্রাইভেট কোচিংয়ে ‘না’ : অতিমাত্রার কোচিং নির্ভরতা সন্তানদের মাঝে একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। এর ফলে অনেক শিক্ষকও বাড়তি আয়ের জন্য ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংমুখি হচ্ছেন। এ সমস্যার কথা মাথায় রেখে ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন হবে না। 

ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস : নবেল স্কুল এন্ড কলেজের সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস হবে ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত।  

অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় : শিশুর সার্বিক উন্নয়নে শিক্ষকদের সাথে অভিভাবকদের মতবিনিময়ের বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীর সুবিধা-অসুবিধা জানতে ও জানাতে প্রতি মাসে নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি : স্কুলটিতে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তির সুযোগ রয়েছে। ফলে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি তা মূল্যায়নের জন্য এ চেষ্টা শিক্ষার্থীদের আরও প্রাণবন্ত এবং পরিশ্রমী করে তুলবে।

এনসিটিবির নির্দেশনা : জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী বই সরবরাহ ও পরীক্ষা মূল্যায়ন করায় শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও বইয়ের বোঝা থেকে মুক্তি পাবে। এছাড়া পয়লা জানুয়ারি থেকেই নিজস্ব ডায়েরি, সিলেবাস ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার থাকায় অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে স্কুলটি এগিয়ে থাকবে।

এছাড়া কোমলমতি শিশুদের প্রতিভা বিকাশে অভিনয়, আবৃত্তি, নৃত্য, সঙ্গীত, শরীরচর্চা, অঙ্কন, বিতর্ক, স্কাউটিং ও বিএনসিসির সুবিধা রয়েছে। অপরদিকে হাতের লেখা সুন্দর করতে রয়েছে দক্ষ প্রশিক্ষক।

 ভাইস প্রিন্সিপাল আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বায়জিদ

মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনের সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রিন্সিপাল আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বায়জিদ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব সুবিধা নিশ্চিত করতে। সব কিছু ঠিক থাকলে স্কুলটি দেশের শিক্ষাঙ্গনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাহিদার সবকিছুই এক ছাদের নিচে পৌঁছে দিতেই আমাদের আত্মপ্রকাশ হবে।

এমএম/এনএফ