প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে কঠোর অবস্থানে ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরও বিদায়ী বছরে দিনাজপুর বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। ঘটেছে প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার মতো ঘটনা। এমন নানা আলোচিত ও সমালোচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে পার হতে চলেছে শিক্ষা খাতের আরও একটি বছর।

২০২২ সালে শিক্ষাঙ্গনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার সার-সংক্ষেপ তুলে ধরা হলো-

প্রশ্নফাঁস

চলতি বছর (২০২২ সাল) দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ছয়টি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয়। এর মধ্যে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা ও রসায়নের পরীক্ষা স্থগিত করে নতুন সময়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব মো. লুৎফর রহমানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

আরও পড়ুন>>প্রশ্নফাঁস : ভুরুঙ্গামারীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরখাস্ত

প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানি

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল অংশের একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকে দেখানো হয়, ‘নেপাল ও গোপাল নামে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জেরে এক ভাই তার সম্পত্তি এক মুসলিমের কাছে বিক্রি করেন। শেষ পর্যন্ত ওই পরিবারকে ভারতে চলে যেতে হয়।’ গল্পে প্রচ্ছন্নভাবে বোঝানো হয় যে ওই পরিবার ভারতে চলে যাওয়ার পেছনে কাজ করেছে ধর্মীয় সহিংসতা। প্রশ্নপত্রে এমন উসকানিকে সাম্প্রদায়িকতা বলছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন>>প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর দায় কার? 

ওই ঘটনায় বিব্রত খোদ শিক্ষামন্ত্রীও। প্রশ্নপত্র নিয়ে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর ধারাবাহিক সাফল্য থাকলেও এবারের প্রশ্ন ফাঁস এবং প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িকতার উসকানি দেওয়া ঘটনা সবকিছু ম্লান করে দিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে সফলতার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যর্থতার বোঝাও।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪১২৫ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

চলতি বছরের বন্যায় দেশে চার হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার ৮৩টি উপজেলায় অবস্থিত। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার ও মেরামতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার। এটি এখন চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন>>‘সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে ধীরগতি

এ বছর নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে কাজ করেছে সরকার। এতে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে। নতুন নিয়মে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত থাকবে না পরীক্ষা। পিইসি-জেএসসি পরীক্ষাও তুলে দেওয়া হবে। এসএসসিতে থাকবে না বিভাগ বিভাজন। এইচএসসিতে দুই বছরের পরীক্ষার ফল মূল্যায়ন করে দেওয়া হবে চূড়ান্ত ফল। সব শ্রেণিতে জোর থাকবে শিখন পদ্ধতির ওপর। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলটিং) এটি চালুর কথা থাকলেও সেটা পিছিয়ে নেওয়া হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যেই করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় আরও এক দফা। ফলে সহসা নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন নিয়ে তৈরি হয় সংশয়।

আরও পড়ুন>>শিক্ষাব্যবস্থা হবে আনন্দময়, থাকবে না বইয়ের বাড়তি চাপ

স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ১২ বছর পার হলেও যারা এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি তাদের ক্যাটাগরি (স্তর) নির্ণয় করার কথা বলা হয়। একই সঙ্গে যারা যৌক্তিক কারণে স্থানান্তর হতে পারেনি তাদের শর্ত দিয়ে সময় বাড়ানোর কথা বলা হয়। বর্ধিত সময়ের মধ্যে কেউ সেই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের পাঠদান অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। নির্দেশনা থাকলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখনও ভাড়া ভবনে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে।

ভুলে ভরা মাধ্যমিকের পাঠ্যবই

‘১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস, বঙ্গবন্ধু মুক্তি পান পাকিস্তানের করাচি কারাগার থেকে, আমার সোনার বাংলা রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি গান’- এ ধরনের নানা ভুল ও অসঙ্গতি চিহ্নিত হয় মাধ্যমিকের নতুন বছরের পাঠ্যবইয়ে। বই ছাপা হওয়ার পর এসব ত্রুটি নজরে এলে সংশোধনের উদ্যোগ নেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

আরও পড়ুন>>আবরার হত্যাকাণ্ড : কাঠগড়ায় ছাত্ররাজনীতি

করোনাকালে ৪৭ হাজার শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে

করোনা মহামারির শেষদিকে এসেও বন্ধ থাকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সময় মাধ্যমিকের চার লাখ ৮১ হাজার ৫৫ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েন। তাদের মধ্যে বাল্যবিবাহ হয় ৪৭ হাজার ৪১৪ শিক্ষার্থীর। এছাড়া শিশুশ্রমে যুক্ত হয় ৭৭ হাজার ৭০৬ জন। বাকি তিন লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন বিভিন্ন কারণে ঝরে পড়েন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

স্কুল ফিডিং কার্যক্রমে অনিয়ম : প্রাথমিকে কমেছে উপস্থিতি

দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার খুদে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিতে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করে সরকার। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমানোসহ বেশকিছু উদ্দেশ্য ছিল স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের। ২০১০ সালে চালু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে কয়েক দফা। সর্বশেষ গত জুন মাসের পর থেকে এ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। দ্রুত স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু করা না হলে পুরো সময়ে শিক্ষার্থী ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।

স্মার্ট ক্লাসরুম স্থাপনে অনিশ্চয়তা

২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু হচ্ছে। গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে বাস্তবভিত্তিক কারিকুলামের আদলে তৈরি হচ্ছে পাঠ্যবই। দেশের ৩২ হাজার বিদ্যালয়ে তৈরি করা হবে ডিজিটাল ক্লাসরুম। এজন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও স্মার্ট ক্লাসরুমের ডিজাইন নির্ধারণ করে সংশোধিত প্রকল্পে যুক্ত করার কথা থাকলেও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের কারণে ঝুলে আছে প্রকল্পটির কার্যক্রম। এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয় জুলাই ২০১৬ থেকে জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেওয়ায় ক্রমশই পেছাচ্ছে বাস্তবায়নের সময়।

কাগজ সংকটে বই পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা

নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আমদানি খরচ বাড়ায় কাগজের মিলগুলোতে দেখা দিয়েছে কাঁচামাল সংকট। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে উৎপাদন। অগ্রিম অর্ডারের টাকাও ফেরত দিচ্ছেন কেউ কেউ। ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রেসমালিকরা। তারা কাগজ সংকটে কার্যাদেশ পেয়েও বই ছাপাতে পারছেন না। বেশি পিছিয়ে আছে প্রাথমিকের বই ছাপানো।

অন্ধকারে ইউনিক আইডি প্রকল্প

চার বছর মেয়াদি প্রকল্পের সময় শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এর আগে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে বহুল আলোচিত ইউনিক আইডির তথ্য সংগ্রহের সময়। তথ্যে গড়মিলে বেড়েছে ভোগান্তিও। এ প্রকল্পের আওতায় প্রথমদিকে এক কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীকে ইউনিক আইডি দেওয়ার কথা। তবে, মেয়াদ শেষ হলেও একজন শিক্ষার্থীর হাতেও ইউনিক আইডি তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রকল্পটির শুরুতে নানা জটিলতায় শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হলেও এখনও সেই ভোগান্তির ইতি টানা সম্ভব হচ্ছে না। পরপর দুই বছর ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের হাতে ইউনিক আইডি তুলে দেওয়ার কথা বলা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

দ্বিধাদ্বন্দ্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি

ছাত্ররাজনীতির প্রশ্নে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো । গত ৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সমন্বিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট থেকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটি ঘোষণা নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চর্চার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির চর্চা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এমন সিদ্ধান্তের পর একদিকে যেমন অভিভাবকদের সমর্থন মিলছে, অপরদিকে ছাত্রনেতাদের কড়া সমালোচনাও বাদ যাচ্ছে না। তবে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চলবে কি না, এমন প্রশ্নের জট খুলছে না।

আরও পড়ুন>>বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি, ‘না’-তে মত বেশি

নন-ক্যাডারদের আন্দোলন

নন-ক্যাডার নিয়োগে আগের নিয়ম বহালসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে ১৫তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিসিএস নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা। দাবি আদায়ে তারা দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ, আলপনা অঙ্কন, মোমবাতি প্রজ্বলন, রশিতে মুলা ঝোলানো, পিএসসির সামনে পরিষ্কার অভিযান ও সাদা মুখোশ পরে প্রতিবাদ জানায়। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ১৫তম দিন অতিবাহিত হলেও সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

দেড় লাখ শিক্ষক নিয়োগের বিশাল কর্মসূচি

প্রাইমারিতে ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ফল ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে আরও ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে পুরো ২০২২ সালজুড়ে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক নিয়োগের বিশাল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। বলতে গেলে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ নিয়োগ প্রক্রিয়া এটি।

সর্বোচ্চ এমপিওভুক্তি

এ বছর নতুন করে সারাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের দুই হাজার ৭১৬টি বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চালু

দীর্ঘ এক যুগ পর প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করেছে সরকার। গত ১০ ডিসেম্বর মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ সিদ্ধান্ত নেয়।

সর্বাধিক বিসিএসের কর্মযজ্ঞ একসঙ্গে

৪১, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের কার্যক্রম চলমান। এর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি। এক বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ কর্মযজ্ঞ পিএসসির।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে রেকর্ড জিপিএ-৫

করোনার প্রভাবে এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করে। দুই লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান। গত বছর এসএসসি ও সমমানে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৮৩ হাজার ৩০৪। গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ বেশি পান ৮৬ হাজার ২৬২ জন।

জ্বালানি সাশ্রয়ে ২ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি

সারাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন রাখার ঘোষণা দেয় সরকার। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার এ ছুটি কার্যকর হয়। অর্থাৎ, আগে শুধু শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন>>২ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না

এনটিআরসিএর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬৮ হাজার ৩৯০ শিক্ষক নিয়োগের জন্য চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এর মধ্যে স্কুল-কলেজে ৩১ হাজার ৫০৮ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮৮২টি। আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন করতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা।

শিখন-ঘাটতি নিয়েই পরবর্তী ক্লাসে পাড়ি

করোনা মহামারিতে আগের ক্লাসের শিখন-ঘাটতির কারণে শিক্ষার্থীরা নতুন শ্রেণির পাঠ ঠিক মতো বুঝতে পারছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা না বুঝে গলাধঃকরণ করছে এবং পরীক্ষার খাতায় তা উগরে দিয়ে আসছে। প্রশ্ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতির গতানুগতিক ধারায় ত্রুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের এ সমস্যা টের পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু অ্যাসাইনমেন্ট এবং বাড়তি ক্লাস নেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত ও সুশৃঙ্খল নয় বলে জানিয়েছে তারা। বলছেন, শিখন-ঘাটতি নিয়েই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ক্লাসে পাড়ি জমাচ্ছেন।

এমএম/এমএ/এমএআর/