প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া এবং অনুপস্থিতি কমাতে দারুন ভূমিকা রেখেছে সরকারের উপবৃত্তির পাশাপাশি মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস নগদ। নগদ-এর সাফল্যের ফলে মুখ উজ্জ্বল হয়েছে সরকারেরও। ফলে সরকার আবারও নগদ-এর সাথে উপবৃত্তি বিতরণের চুক্তি করতে যাচ্ছে। যা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এনে দিয়েছে স্বস্তি। 
 
সরকার গত কয়েক বছর ধরেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে আসছে। কিন্তু শুরুতে এ নিয়ে ছিল বেশ অরাজকতা। তখন যে এমএফএস প্রতিষ্ঠানটি উপবৃত্তি বিতরণ করতো, তাদের কাজে ছিল না অস্বচ্ছতা। সে সাথে এ প্রতিষ্ঠানটির এজেন্ট খুঁজে পাওয়াই ছিল ভীষণ কষ্টসাধ্য। ফলে নামে বরাদ্ধ হলেও শিক্ষার্থীদের হাতে খুব একটা পৌছাতো না উপবৃত্তি। 

এ অবস্থায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উপবৃত্তি বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস নগদ-এর সাথে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আর এরপর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে এই উপবৃত্তি বিতরণের চিত্র। তাদের এ কাজে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। এর আগে ভিন্ন একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করত সরকার।

তখন প্রতি হাজার টাকার উপবৃত্তি বিতরণ করতে সরকারের কাছ থেকে সাড়ে ২১ টাকা করে সার্ভিস চার্জ এবং ক্যাশ-আউট চার্জ নিত শিওর ক্যাশ। সেখানে ‘নগদ’ সব মিলে সরকারের কাছ থেকে নিচ্ছে হাজারে মাত্র সাত টাকা। সুবিধাভোগী মূল টাকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাশ-আউটের খরচও পেয়ে যাচ্ছেন, ফলে গ্রাহককে বাড়তি কোনো অর্থ খরচ করত হচ্ছে না। শুধু ভাতা বিতরণে এ প্রক্রিয়ায় সরকারের অন্তত অর্ধশত কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে।

শিরীন আখতার ভালো করে কথা বলতে পারেন না। ক্যামেরা দেখলেই মুখ লুকান। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়েটির হাত ধরে স্কুল থেকে বের হতে হতে তারপরও বললেন, ‘সরকার একটা কামের কাম করছে। নগদ দিয়া উপবৃত্তি দিতাছে। মোগো পোলামাইয়া লেহাপড়া শিখতাছে।’

বরিশাল শহরের গীর্জা মহল্লার ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাতোয়ারা বেগম বলছিলেন, ‘আমি প্রথমেই বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই এ কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের উপবৃত্তি দিয়ে বিদ্যালয়ে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। উপবৃত্তি পাওয়ার ফলে আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে। কমেছে ঝরে পড়ার হার। এটা সামগ্রিকভাবে শিক্ষার মানকে অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের এ উদ্যোগ দেশের জন্য অসাধারণ একটা ব্যাপার।’ এছাড়া নগদকেও আমি বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। ডাক বিভাগের একটি সেবা হিসেবে তারা খুব ভালো দায়িত্ব পালন করছে। নগদ এ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে উপবৃত্তি পাওয়ায় ভোগান্তি নেই বললেই চলে। এখন অভিভাবকরা বাড়ির কাছ থেকেই টাকা তুলে নিতে চাচ্ছেন। আমি আশা করি, দায়িত্ব পেলে নগদ আবারও এভাবেই শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।’

এফকে