জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এটা জানবে যে, বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন মহামানব, তিনি কঠিন পরিস্থিতিতে এই ভাষণের মাধ্যমে ভারসাম্য রক্ষা করেছিলেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু না বলে জনগণকে শান্ত রাখতে পেরেছিলেন। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হননি। বিশ্বের আর কোনো রাজনীতিবিদ এমনটা পারেননি। 

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি, বেসরকারি কলেজের ৮০ জন শিক্ষকের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রশিক্ষণে বক্তব্য দানকালে তিনি এ কথা বলেন। 

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু ইউনিলেটারেল ডিকলারেশন অব ইন্ডিপেনডেন্সে যেতে চাননি। তিনি যদি ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেন, তাহলে বিশ্ববাসীর সমর্থন পেতাম কি না তা এক বড় প্রশ্ন ছিল। এটিই তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। এ কারণেই তিনি রাজনীতির কবি। তা না হলে কেমন করে একজন মানুষ নির্দেশ দিচ্ছেন অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। আর পরক্ষণেই তিনি বললেন রিকশা চলবে। এটিই হচ্ছে রাজনীতির বিজ্ঞান। এখানেই তিনি স্বতন্ত্র। তিনি একদিকে বলেছেন সব কিছু বন্ধ থাকবে, অন্যদিকে গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে বলেছেন রিকশা চলবে। তিনি যে সারাজীবন গরীব, দুঃখী, মেহনতী মানুষের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন এটি তারই বহিঃপ্রকাশ।

বিকেলের সেশনে প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভূমিকা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও প্রফেসর আফসান চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন গবেষক মামুন সিদ্দিকী।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি ও প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী ও কথাসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। 

এছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধার বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বীরাঙ্গনা কানন গোমেজ। প্রশিক্ষণে কোর্স উপদেষ্টা হিসেবে সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন। 

এমএম/কেএ