প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা কাটল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মূল বাধা ‘মামলার’ ওপর আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সম্মতি পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

ফলে শিগগিরই ৫৬ হাজার শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে আইনি আর কোনো বাধা রইল না বলে মনে করছেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আশরাফ উদ্দিন। তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর রোববার (১৪ মার্চ) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সম্মতি পেয়েছি। ফলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আইনি আরও কোনো বাধা রইল না। টেকনিক্যাল ও চাহিদা সংক্রান্ত কাজ শেষ করেই দ্রুত সময়ের মধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, রোববার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সম্মতি পেয়েছে নিয়োগকারী এই কর্তৃপক্ষ। এখন টেকনিক্যাল কিছু কাজ শেষ করে যেকোনো দিন তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে। 

এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কাজ জোরেশোরে চলছে। তবে আমরা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য একটু সময় নিতে চাই। আমরা সম্পূর্ণ কাজ নির্ভুলভাবে করতে চাই। সেজন্য আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সংশোধিত তালিকা পাঠাতে বলেছি। এই কাজ তদারকির জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে ৫৭ হাজারের কিছু বেশি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুলের কারণে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োগ না পাওয়া এক হাজার ২৮৪টি পদে আগের নিয়োগের ভুক্তভোগীদের নিয়োগে সুপারিশ করা হয়েছে। সে হিসাবে ৫৬ হাজারের মতো শূন্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ পেতে ১৩তম নিবন্ধনধারীরা রিট মামলা করেছিলেন। রিট করা দুই হাজার প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দিতে আদালতের নির্দেশনা আছে। এছাড়া যাদের বয়স ৩৫ বছর হয়ে গেছে তাদের আবেদনের সুযোগের বিষয়েও নির্দেশনা দেন আদালত।

এদিকে দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন করছিল নিয়োগ প্রত্যাশীরা। তারা বিভিন্ন সময় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১-১৫তম ব্যাচের নিবন্ধনধারীরা এ আন্দোলন করেছেন।

নিয়োগপ্রত্যাশীরা জানান, সারাদেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫৭ হাজার শূন্য পদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অথচ নানা অজুহাতে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে না। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার জন্য তারা প্রতীকী অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হয়েছেন।

এনএম/ওএফ