এনসিটিবি চেয়ারম্যান
পাঠ্যবইয়ের সংকট নেই, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম/ ছবি : ঢাকা পোস্ট
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেছেন, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যবইয়ের কোনো সংকট নেই। শিক্ষা অফিসারদের দেওয়া তথ্য মতে কিছু বই শর্ট রয়েছে যা চাহিদা অনুযায়ী ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। বাজারে এনসিটিবির বই বিক্রিরও সুযোগ নেই। যারা পাঠ্যবই বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইয়ের সংকট থাকলেও এনসিটিবির বই কীভাবে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন অভিযোগের ভিত্তি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইয়ের কোনো সংকট নেই। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সকল উপজেলার শিক্ষা অফিসারদের থেকে ই-মেইলে তথ্য নেওয়া হয়েছে। যেখানে কেউ কেউ ৪০-১০০টির মতো কিছু বিষয়ের বই কম থাকার কথা জানিয়েছেন। যেটি সংকট বলা চলে না। তাছাড়া সময়মতো বই পাঠানোর পরও কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বে শিক্ষার্থীদের কাছে বিতরণ করেছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খোলা বাজারে বিক্রি ঠেকাতে গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকারের অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে।
পাঠ্য বইয়ের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর হওয়ার পরও ভুল এবং অসঙ্গতি কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা জানুয়ারির ১ তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার চেষ্টা করি। এখানে বইয়ের প্রিন্টিং একটি বড় বিষয়। কিছু কুচক্রী মহল আছে যারা ইচ্ছে করেই দেরি করানোর চেষ্টা করে। যেন শেষ সময়ে তড়িঘড়ি করে নিজেদের ইচ্ছেমত খারাপ বই দিতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
বিজ্ঞাপন
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বইয়ের কনটেন্ট নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এ বছর নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী বই দেওয়া হয়েছে। আমরা চাচ্ছিলাম শুধুমাত্র ষষ্ঠ শ্রেণিতেই নতুন কারিকুলামের বই দিতে। কিন্তু শেষ সময়ে সপ্তম শ্রেণিতেও নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই বিতরণের সিদ্ধান্তের কারণেই কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে কেউ ইচ্ছে করেই সমস্যা তৈরি করেছে কিনা সে বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চলছে। দোষীরা যেন ভবিষ্যতে আর বই লেখার সঙ্গে যুক্ত হতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, এনসিটিবির আইন অনুযায়ী বই লেখা হয়। সেক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ, টিচিং লার্নিং বিশেষজ্ঞ, কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ, স্কুল শিক্ষক এবং এনসিটিবির বিশেষজ্ঞ থাকেন। এরপর আবার আরেকটা গ্রুপ লিখিত বইয়ের যৌক্তিক মূল্যায়ন করেন। এই সবকিছুই এনসিটিবির আইন অনুযায়ী করা হয়। সর্বোপরি বই বিতরণের পর সারা দেশের নির্ধারিত ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে ভুল বা নতুন কিছু পুনর্মুদ্রণের সময় সংযোজন বিয়োজন করা হয়।
পাঠ্যপুস্তকের সব ভুল ভুল নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমি যদি খুলনা বাংলাদেশের রাজধানী লিখে থাকি অথবা ১৯৭২ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে লিখে থাকি সেটি নিশ্চিত ভুল। আবার দৃষ্টিভঙ্গিজনিত কিছু বিষয়কেও ভুল মনে করা হচ্ছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। যে বিষয়গুলোকে ভুল বলে প্রচার করা হচ্ছে সেগুলো আসলেই ভুল কিনা সেটা তদন্তের শেষে বলা যাবে। তবে পাঠ্যপুস্তকের বড় বৈশিষ্ট্য হলো নির্ভুল হতে হবে এবং এর কোন লেখা জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাউকেই কোন আঘাত করবে না। নতুন পাঠ্যবইয়ে এমন কোন বিষয় ঘটলে সেই শব্দ গুলোকেও এক্সপাঞ্জ (প্রত্যাহার) করা হচ্ছে।
আরএইচটি/এসকেডি