মাধ্যমিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (১৫ মার্চ) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. আবদুর রহমান।

আবদুর রহমান বলেন, দেশে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করা একজন শিক্ষকের বেতন মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা। ১০ বছর চাকরি করার পর একটি উচ্চতর স্কেল এবং ১৬ বছর চাকরি করার পর একটি স্কেল প্রদান করেও একজন শিক্ষকের সর্বসাকুল্যে বেতন দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা মাত্র। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল প্রদান করা হলেও প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো নতুন কোন পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়নি। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে সামান্য বেতনে শিক্ষক কর্মচারীদের সংসার চালানো এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

শিক্ষক সমাজ আজ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৪ সালে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদান করা হলেও প্রায় ১৮ বছরে তা আর বাড়েনি। বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয় ১ হাজার টাকা। চিকিৎসা ভাতা বাবদ প্রদান করা হয় মাত্র পাঁচশ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হলেও অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য অতিরিক্ত ৪ শতাংশসহ মোট ১০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়। আমাদের সন্তানদের জন্য কোন শিক্ষা ভাতা প্রদান করা হয় না। অবসর ও কল্যাণ ভাতার টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়। নেই কোনো অবসর পদ্ধতিমূলক পিআরএল ব্যবস্থা।

এ সমস্যা নিরসনের একমাত্র পথ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ বলে উল্লেখ করেন এ শিক্ষক নেতা।

তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুলের ছাত্র বেতনসহ সকল আয় সরকারের কোষাগারে জমা নিয়ে সেই টাকা দিয়েই শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করে বেতন-ভাতাদি দেওয়া সম্ভব বলে আমরা মনে করি। প্রায় ১৫ বছর যাবৎ মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক মেহনতি মানুষের কল্যাণে সরকার দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আমরা আশা করেছিলাম জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেবেন, কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আগামী ২০২৩-২৪ জাতীয় বাজেটেই (বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীগণের চাকরি জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা প্রদান করবেন এবং সেই লক্ষ্যে আগামী ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বেই পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস প্রদানের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এমএম/এমজে