সরকারি কিংবা বেসরকারি সব ধরনের চাকরিতে পদোন্নতি চান না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এটা ব্যতিক্রম। সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি নিতে চান না অনেক শিক্ষক। এমনকি এ পদোন্নতি ঠেকাতে অনেকে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

এর ফলে সামনে প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি দেওয়ার আগে যারা পদোন্নতি চান না এমন শিক্ষকদের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মাধ্যমে চেয়েছে প্রাথমিক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৫ মে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদানের লক্ষ্যে পাঠানো প্রস্তাবের সঙ্গে পদোন্নতি নিতে অনিচ্ছুক শিক্ষকদের তালিকা প্রয়োজন। এজন্য তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে ডিপিই মহাপরিচালককে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন পরে পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। পদোন্নতির মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যেন এটি প্রশ্নবিদ্ধ না হয় কিংবা কোন মামলার উদ্ভব না ঘটে সেজন্য কার্যক্রমটি সম্পন্ন হওয়া জরুরি।

অতীতে দেখা গেছে, অনেকে শিক্ষক পদোন্নতি নিতে রাজি নয়। তারা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের কাছে পদোন্নতি সারেন্ডার করতে চায়। কেউ কেউ আদালতের দ্বারত্ব হয়। তাই ভবিষ্যতে পদোন্নতি প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে এবং আদালতে মামলা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

এ অবস্থায় প্রতিটি উপজেলা থেকে ১০ থেকে ২০ জন শিক্ষক পদোন্নতি নিতে অনিচ্ছুক, এমন আবেদন জমা পড়েছে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বল্প সংখ্যক শিক্ষকের আবেদন যাচাই করা মোটেই সময়সাপেক্ষ বা কষ্টসাধ্য কাজ নয়। তাই যারা সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি চান না তারা ভবিষ্যতে পদোন্নতির আবেদন করবেন না মর্মে অঙ্গীকারসহ লিখিত দিতে হবে। একইসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রত্যয়ন ও মতামতসহ পাঠাতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটাই পৃথিবীর একমাত্র কর্মক্ষেত্র যেখান পদোন্নতি দিতে চাইলেও কর্মী পদোন্নতি নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। সুতরাং বুঝতে হবে প্রাথমিক শিক্ষকরা কী পরিমাণ বৈষম্যের শিকর।

এনএম/এমজে